Site icon Jamuna Television

চড়া সুদে বেপরোয়া ঋণ নিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার

আলমগীর হোসেন:

চলতি বছরের জুন শেষে বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০৪ বিলিয়ন ডলারে। শেষ ৬ মাসেই বেড়েছে ৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন। ২০০৮-০৯ এ বৈদিশিক ঋণ ছিল মাত্র ২১ বিলিয়ন ডলার।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদেশি ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়নি ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার। যে কারণে সহজে ঋণ পেতে কঠিন শর্তে বেশি সুদে ঋণ নেয়া নেয়া হয়। শেষদিকে বাধ্য হয়েই ঋণ নিতে হয়েছে। যার ফলে ঋণের সাথে বেড়েছে ঝুঁকিও। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশি ঋণকে ঝুকিপূর্ণ মনে করে না।

মূলত, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ঢাকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসের মতো বেশকিছু উচ্চাভিলাষী মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে বাছবিচার ছাড়াই বিদেশি উৎস ঋণ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। যে কারণ গত দেড় দশকে দ্রুত গতিতে বাড়ে বিদেশি ঋণের বোঝা।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, আগে যেগুলো আমরা ছাড়ের ভিত্তিতে পেতাম, এখন ওদিকে যাওয়া হয়নি। সল্পমেয়াদে বেশি সুদ দিতে হচ্ছে, গ্রেস পিরিয়ড কম। কিন্তু ঋণ পাওয়াটা বেশ সহজ। সেখানে অনেক ধরনের ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িত; যারা ঋণ দিচ্ছেন, আর যারা ঋণ নিচ্ছেন উভয়পক্ষেরই ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িত ছিল। যেটা জাতীয় স্বার্থের সাথে সবসময় যে যায় তা কিন্তু না।

ঋণের ক্ষেত্রে প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনায় নেয় হয়নি। জাতীয় অর্থনীতিতে কতটা ভূমিকা রাখবে তাও আমলে নেয়নি শেখ হাসিনা সরকার। পাইপ লাইনে থাকা প্রকল্পে ঋণ নেয়ার আগে পুনবিবেচনার পরামর্শ অর্থনীতিবিদের।

ড. জাহিদ হোসেন বলেন, অর্থনীতির জন্য এটা কতটা লাভজনক হবে তা পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। সেটা যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সহায়তা পেয়ে থাক না কেন। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য যথার্থ ব্যবহার যেখানে করা যায়, সেগুলোর কারণে বৃদ্ধিটা পায়। অপচয়ের কারণে যেন আগামীতে ঋণের বোঝা না বাড়ে সেটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিদেশি ঋণ নেয়ার সময়ই পরিশোধের বিষয়ে পরিকল্পনা করা হয়। তাই এই ঋণ পরিশোধ চাপে ফেলবে বলে মনে করে না বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, যখন আমি পাবলিক সেক্টরে ঋণের কথা বলছি, তখন সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এর সাথে জড়িত থাকে। পরিকল্পনা কমিশন থাকে, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থাকে, অর্থ মন্ত্রণালয় থাকে এবং ৩ পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতেই ঋণগুলো গ্রহণ করা হয়ে থাকে। যখনই পাবলিক সেক্টরে ঋণ গ্রহণ করা হয়, তখন সরকারের তরফ (ইআরডি) থেকে রি-পেমেন্ট শিডিউলও করা হয়। কবে এটি শোধ হবে। তো আমি মনে করি না, এটি চাপের মধ্যে ফেলবে।

উল্লেখ্য, মোট বিদেশি ঋণের মধ্যে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের ঋণ সাড়ে ২০ বিলিয়ন ডলার।

/এমএন

Exit mobile version