আসাদ সরকার পতনের পর থেকেই সিরিয়ায় কূটনৈতিক তৎপরতা দেখাচ্ছে তুরস্ক। এক যুগ পরে দূতাবাস চালুর পর প্রথমবার সিরিয়া সফর করলেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সফররত তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে হাসিমুখে বরণ করে নেন বিদ্রোহী নেতা আল শারা। আসাদ সরকারের পতনে একযুগ পর আবার সিরিয়ার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আগ্রাহী হয়েছে তুরস্ক। ১২ বছর পর প্রথমমবারের মতো দামেস্ক সফর করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান।
আঙ্কারা-দামেস্ক কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়ন আর সিরিয়ার পুনর্গঠন নিয়ে দুই নেতার মধ্যে হয় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন আল শারা ও হাকান ফিদান। সিরিয়ার উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দেশটির ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আহ্বান জানান পশ্চিমাদের প্রতি।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেছেন, স্থিতিশীলতার দিকে সিরিয়া যে যাত্রা শুরু করেছে তাতে পাশে থাকতে চায় তুরস্ক। রাষ্ট্র পুনর্গঠন ও সক্ষমতা বাড়াতে সবধরনের সহযোগিতা করবে তুর্কি প্রশাসন। সিরিয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিকের জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন দেশটির ওপরে আরোপিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া। যা নিশ্চিতে এগিয়ে আসতে হবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সিরিয়া সফরের পর দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। আঙ্কারা-দামেস্ক পারস্পরিক সহযোগিতার যে যাত্রা শুরু করেছে তা দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে প্রত্যাশ্যা ব্যক্ত করেন তিনি।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যে এরদোগান বলেন, সিরিয়ার বিদ্রোহী নেতা আল শারার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সংলাপ করছে তুরস্ক। এরই মধ্যে তুরস্ক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেখা করেছেন তার সাথে। আমি আশাবাদী, পারস্পরিক যোগাযোগের এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
এ সময়, সিরিয়ায় সন্ত্রাসবাদ বরদাস্ত করবেন না বলে হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সিরিয়ায় কোনো ভবিষ্যৎ নেই তাদের।
এরদোগান আরও বলেন, সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো কার্যক্রম বন্ধ না করলে সর্বোচ্চ কঠোরতার সাথে প্রতিহত করা হবে তাদের। সিরিয়ায় তুরস্কের সন্ত্রাসীবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে। পশ্চিমা মদদপুষ্ট এসব গোষ্ঠীর সময় শেষ হয়ে আসছে। ইসরায়েলি বাড়াবাড়িও থামবে। থামতেই হবে।
গৃহযুদ্ধ শুরুর পর ২০১২ সাল থেকে সিরিয়ায় বন্ধ ছিলো তুরস্কের কূটনৈতিক কার্যক্রম। ১১ দিনের অভিযানে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের পর থেকেই দেশটির নতুন প্রশাসনের সাথে সু-সম্পর্ক গড়তে তৎপরতা চালাচ্ছে তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ।
/এআই
Leave a reply