Site icon Jamuna Television

লিটন দলে না থাকার কারণ নিয়ে খবর ভারতীয় মিডিয়ায়, সামাজিক মাধ্যমে হাস্যরস

ফাইল ছবি

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে অবস্থানে পৌঁছেছে। সরকারি বৈঠক থেকে সীমান্ত…. সবজায়গায় শীতল সম্পর্ক। এরমধ্যে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে ভারতের অপপ্রচারের কারণে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের মিডিয়া ‘এবিপি আনন্দ’ বাংলাদেশকে নিয়ে বেশকিছু ভিত্তিহীন তথ্য ছড়িয়েছে। যা নিয়ে গণমাধ্যমটির প্রতি বাংলাদেশি পাঠকদের একপ্রকার নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ নিয়ে তাদের কল্পকাহিনী ও মিথ্যা তথ্য বেশ হাসির খোরকও জুগিয়েছে। এবার তেমনই মিথ্যা ও কল্পকাহিনী নির্ভর সংবাদ প্রকাশ করলো এবিপি আনন্দ।

বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে জায়গা হয়নি লিটন দাসের। জাতীয় দলে সাম্প্রতিক সময়গুলোতে তার একেবারেই বাজে সময় যাচ্ছে। ফলে অবধারিতভাবেই দলে জায়গা হারিয়েছেন এই ওপেনার। বিষয়টিতে সংখ্যালঘু ট্যাগ খোঁজার চেষ্টা করেছে ভারতের মিডিয়াটি।

মিডিয়াটির ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট

মিডিয়াটি প্রচার করছে, হিন্দু হওয়ায় নাকি দলে জায়গা পায়নি লিটন দাস। এবিপি গতকাল রোববার ‘সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারে উত্তাল দেশ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য বাংলাদেশের দল থেকে বাদ লিটন’— শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে তারা বলে, ‘২০২৩ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে ১৩টি ইনিংসে একটি অর্ধশতরানও হাঁকাতে পারেননি লিটন। শেষ সাত ইনিংসের মধ্যে ছয়বার তো তিনি দুই অঙ্কের রান অবধি করতে পারেননি। তাই লিটনের বাদ হওয়া খুব একটা আশ্চর্যজনক নয় বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে অনেকে আবার এর মধ্যে অন্য গন্ধ পাচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ওপার বাংলায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ছবি বারংবার ধরা পড়েছে। লিটন দাসের বাদ পড়ার পর অনেকে দুইটি বিষয়কে এক সূত্রে গেঁথে ফেলেছেন।’

গতকাল বিপিএলে নিজের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলেছেন লিটন দাস। পাশাপাশি ২০ ওভারের ক্রিকেটে নিজের প্রথম শতকের দেখাও পেয়েছেন এই ক্ল্যাসিক ব্যাটার। এরপর পশ্চিমবঙ্গের মিডিয়ায় আরেকটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। ‘হিন্দু বলেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল থেকে বাদ? বাংলাদেশের ক্রিকেটার লিটন দাস যা বললেন…শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে লিটনের উদ্ধৃতিতে বলা হয়, লিটন জানিয়েছেন, তাকে কেন বাদ দেয়া হলো, তা নিয়ে নির্বাচকেরা সরাসরি কিছু বলেননি। বলেছেন, ‘একটা স্পষ্ট বার্তা দেয়া হয়েছে। তবে সেটা নির্বাচকেরা দেননি। অন্যভাবে জেনেছি। আমি কেন বাদ পড়েছি, সেটা সংবাদমাধ্যমেই বেরিয়েছে। আমি কেন বাদ পড়েছি, সেটা নিয়ে লেখালিখি হয়েছে। আমি পারফর্ম করতে পারিনি। সেটা সকলেই জানেন।’

এদিকে, এবিপি আনন্দের এমন সংবাদ প্রচারের সমালোচনা করছেন পাঠকরা। এমনকি সংবাদ মাধ্যমটিতে যুক্তদের নানা আক্রমণাত্মক ভাষায় তাদের ফেসবুক পেজে নিউজের নিচে কমেন্ট করছেন। সংবাদটিকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে অসংখ্য ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের মন্তব্য জানিয়েছেন।

প্রসেনজিৎ ব্যানার্জি তপু নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী কমেন্টে করেছেন, পারফরম্যান্সে বাদ পড়ছে লিটন। উল্টাপাল্টা লিখেন না। বিপিএলে ভালো করলে সুযোগ আছে।

মো. জাহিদ হাসান লেখেন, ভারতের নিকৃষ্ট মিডিয়ার মধ্যে প্রথম হয়েছে এবিপি আনন্দ নিউজ। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টিকারী একটি মিডিয়া এটি। এর মাধ্যমে ক্ষতি কিন্তু বাংলাদেশের চেয়ে বেশি আপনাদের হচ্ছে সুতরাং আর গুজব ছড়াবেন না। লিটন দাস তার বাজে ফর্মের কারণে দল থেকে বাদ পড়েছে আর সৌম্য সরকার দলের মধ্যে আছে তাকে নিয়ে তো কিছু বললেন না।

পলাশ ইবরাহিম লেখেন, একটা নিউজ এজেন্সির সামান্যতম একটা ভালো বোধ থাকা দরকার, এতটা নিম্নমানের মানসিকতা নিয়ে এরা সাংবাদিক হয় কি করে এটাই বুঝিনা। ভালো খেলে না তাই বাদ পড়লো, সেটাকে সাম্প্রদায়িক রঙ দিয়ে দিচ্ছে।

কাজী শাওন লেখেন, আপনারা আছেন বলেই আমরা বিনোদন পাই।

গৌতম বিশ্বাস নামের ভারতীয় এক ফেসবুক ব্যবহারকারী কমেন্টে লেখেন, আজাইরা একটা নিউজ না জেনে-বুঝেই। আইপিএলে কেনো নেননি তাকে, আর এক ম্যাচ খারাপ খেলাতেই বাদ দিয়েছিলেন কেনো?

লিটন দাসকে বাদ দেয়ার পেছনে সংখ্যালঘু ট্যাগ লাগানো হলেও দলে সৌম্য সরকারকে নেয়ার বিষয়ে কিছুই লেখেনি ভারতীয় মিডিয়াটি। এটি নিয়েও নেটিজেনরা বেশ মজাই নিচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

অনেকেই মজা করে লিখছেন, সৌম্য সরকার মুসলিম হয়েছে এটা জানলামই না। হিন্দু হওয়ায় লিটন বাদ পড়েছে, সৌম্য কি তাহলে মুসলিম হয়ে দলে জায়গা পেল? এই রসিকতাই করছেন অধিকাংশ কমেন্টকারী।

/এনকে

Exit mobile version