Site icon Jamuna Television

গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে যা বলছেন বিশ্বনেতারা

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও দখলদার ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। বুধবার কাতারের রাজধানী দোহায় উভয়পক্ষ চুক্তি করেছে বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। যুদ্ধবিরতির খবরটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন মধ্যস্থতাকারী কাতারের প্রধানমন্ত্রী। যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা। এ নিয়ে তারা প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন। যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো বিশ্বনেতা কী বললেন, তা দেখে নেয়া যাক।

জো বাইডেন

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময় চুক্তির কথা নিশ্চিত করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই চুক্তি গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করবে, ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিকদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি করবে এবং ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে বন্দী থাকার পর জিম্মিদের সঙ্গে তাদের পরিবারের পুনর্মিলন ঘটাবে।’

জো বাইডেন বলেন, ‘লেবাননে যুদ্ধবিরতি ও ইরান দুর্বল হওয়ার পরে হামাস যে ব্যাপক চাপে ছিল এবং আঞ্চলিক সমীকরণ যেভাবে বদলে গিয়েছিল, এই যুদ্ধবিরতি কেবল সেটারই ফলাফলই নয়; বরং আমেরিকার দৃঢ় ও কষ্টসাধ্য কূটনীতিরও ফলাফল। এটা সম্পন্ন করার জন্য তাদের (কূটনীতিকদের) প্রচেষ্টায় আমার কূটনীতি কখনও থেমে থাকেনি।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প

যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ বিষয়ে একাধিক পোস্ট করেছেন।

প্রথম পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে জিম্মিদের জন্য আমাদের একটি চুক্তি হয়েছে। খুব শিগগির তাদের মুক্তি দেয়া হবে। সবাইকে ধন্যবাদ!’

ট্রাম্প আরেক পোস্টে লিখেছেন, ‘এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমার জাতীয় নিরাপত্তা দল ইসরায়েল এবং আমাদের মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে, যাতে গাজা আর কখনও সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল না হয়।’

কাতারের প্রধানমন্ত্রী

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল-থানি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে চূড়ান্ত বৈঠক শেষে গতকাল সন্ধ্যায় দোহায় আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, উভয়পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এটি রোববার থেকে কার্যকর হবে। তিনি রোববার পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

মিসরের প্রেসিডেন্ট

মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি গাজায় দ্রুত মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেছেন, জাতিসংঘ এই চুক্তিকে সমর্থন করতে এবং এখনও ভোগান্তিতে থাকা অগণিত ফিলিস্তিনির জন্য টেকসই মানবিক ত্রাণ সরবরাহ বাড়াতে প্রস্তুত ছিল।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান আঙ্কারায় সাংবাদিকদের বলেছেন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাতের সমাধানের জন্য তুরস্কের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন যুদ্ধবিরতি চুক্তির খবরকে স্বাগত জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘জিম্মিদের তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে পুনর্মিলন করা হবে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের কাছে মানবিক সাহায্য পৌঁছাবে। এটি একটি পুরো অঞ্চলে আশা জাগিয়ে তুলেছে, যেখানে মানুষ দীর্ঘকাল ধরে অপরিসীম দুর্ভোগ সহ্য করেছে। উভয় পক্ষকে এই চুক্তি অবশ্যই পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, যা এই অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী স্থিতিশীলতা এবং সংঘাতের কূটনৈতিক সমাধানে সহায়তা করবে।’

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে আশা করা যায় যে অবশেষে জিম্মিদের মুক্তি দেয়া হবে এবং গাজায় প্রাণহানি বন্ধ হবে।’

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মাসের পর মাস ধরে ভয়াবহ রক্তপাত এবং অগণিত প্রাণহানির পর অবশেষ সেই দীর্ঘ বিলম্বিত খবর এলো, যেটার জন্য ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি জনগণ মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করছিলেন।

বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী

বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার ডি ক্রু বলেছেন, ‘দীর্ঘ সংঘাতের পর জিম্মিদের বিষয়ে আমরা বেশ স্বস্তি বোধ করছি। আশা করি, এ যুদ্ধবিরতি যুদ্ধের অবসান ঘটাবে এবং একটি টেকসই শান্তির সূচনা করবে। বেলজিয়াম সাহায্য করতে প্রস্তুত।’

নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী

নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গাহর স্টোয়ের ‘গাজাসহ (সমগ্র ফিলিস্তিনের) পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্ব গ্রহণের জন্য ফিলিস্তিনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয়কেই বিশ্বাসযোগ্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেতে হবে এবং এই সমাধান আঞ্চলিকভাবে স্থির করতে হবে।’

/এনকে

Exit mobile version