Site icon Jamuna Television

নতুন মুদ্রানীতি: নীতি সুদহার অপরিবর্তিত, বাড়তে পারে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি

আলমগীর হোসেন:

প্রায় আড়াই বছর ধরে দেশের মূল্যস্ফীতি ২ অঙ্কের ঘরে। নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে নীতি সুদহার। তাতেও কাজ হয়নি। এখনও খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৩ শতাংশের উপরে।

এর মধ্যে মধ্যেই চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে আসছে নতুন মুদ্রানীতি। মূল লক্ষ্য টাকার মান ও বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনা স্থিতিশীল রাখা এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ।

নতুন মুদ্রানীতিতে অপরিবর্তিত রাখা হতে পারে নীতি সুদহার। বিনিয়োগে মন্দাভাব থাকায় বাড়ছে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধিও— এমন আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার বাড়ানোর খুব একটা সুযোগ নেই। ঋণের প্রবৃদ্ধিও হতাশাজনক। আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরানো জরুরি। সব মিলিয়ে এবারের মুদ্রানীতি বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য চ্যালেঞ্জিং।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেছেন, এখন রেপো রেট ১০ শতাংশ, এটাই তো ইঙ্গত দেয় এখানকার অবস্থাটা কী। মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব কিন্তু আমরা গত ৬ মাসে দেখতে পাই নাই। সমস্যা হয়তো অন্য কিছু। বাংলাদেশ ব্যাংক এ নিয়ে এখন যেই অবস্থায় (সংকোচন) পৌঁছে গেছে, আমার মনে হয় আর এটাকে দীর্ঘ করার বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত মতামত নাই। যদি করা হয়, সেটার ফল পাইতে হবে।

বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধিও কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। মুদ্রানীতিতে প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৮ শতাংশ ধরা হলেও এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। দীর্ঘদিন এ ধারা অব্যাহত থাকলে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।

মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলছিলেন, এখানে সুদের হার অনেক উচ্চ হয়ে গেছে, ঋণের চাহিদা কমে গেছে। প্রাইভেটি ক্রেডিট গ্রোথ ৭-৮ শতাংশে চলে আসছে। আমাদের জন্য এটা আশঙ্কাজনক। আমরা ভয় পাচ্ছি, এ দেশের ৮০-৮৫ শতাংশ ইনফরমাল সেক্টরে ক্রেডিট গ্রোথ যদি এত কম থাকে, তা অর্থনীতির জন্য আশঙ্কাজনক। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এবার অন্য সময়ের তুলনায় খুব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।

নতুন মুদ্রানীতিতে যে উদ্যোগই নেয়া হোক, তার প্রভাব হতে হবে দৃশ্যমান। আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরানো জরুরি বলেও মনে করেন ব্যাংকাররা।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বললেন, প্রত্যাশা হচ্ছে আমাদের স্থিতিশীলতা। আমাদের জন্য বাজারের স্থিতিশীলতা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেই স্থিতিশীলতা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। যদি স্থিতিশীলতা পাওয়া না যায়, গ্রোথটা তো পরের কথা।

বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি আগের মতো থাকলেও ঋণ বিতরণে উৎপাদনশীল খাতে গুরুত্ব দেয়া হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

/এমএন

Exit mobile version