Site icon Jamuna Television

চ্যাম্পিয়নস লিগ: বাদ পড়ার শঙ্কা কাটিয়ে নকআউটে ম্যান সিটি

ক্লাব ব্রুগার বিপক্ষে ইতিহাদে প্রথমার্ধে পিছিয়ে থেকে ম্যানচেস্টার সিটি যখন মাঠ ছাড়ছিল, হয়তো আশা ছেড়ে দিয়েছিল দলটির অন্ধ ভক্তরাও। এভাবে খেলে কি আর ম্যাচ জেতা সম্ভব! দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়াতে হলে অবিশ্বাস্য কিছুই করতে হতো পেপ গার্দিওলা দলকে।কারণ, এই ম্যাচটিতে সিটির শুধু ড্র করাটাই যথেষ্ট ছিল না, প্লে-অফ খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে জিততেই হবে হাল্যান্ডতের।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেই সমীকরণ মেলাতে পেরেছে গার্দিওলার দল। হেরে বাদ পড়ার অপেক্ষায় থাকা দলটিই প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে ম্যাচ জিতলো ৩-১ গোলে। আর এই জয় সিটিকে সুযোগ করে দিয়েছে ২২ নম্বরে থেকে প্লে-অফ খেলে পরের পর্বে যাওয়ার। তবে প্লে-অফে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। যেখানে দলটি মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদ অথবা বায়ার্ন মিউনিখের। অন্য দিকে ম্যাচ হারলেও টিকে গেছে ক্লাব ব্রুগাও। শেষ দল হিসেবে অর্থাৎ ২৪ নম্বরে থেকে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে তারা।

ইতিহাদে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে সিটি। বলের দখল রেখে প্রতিপক্ষের রক্ষণকে চাপেও ফেলার চেষ্টা করে তারা। কিন্তু সিটির সম্ভাব্য সব কৌশল নিয়ে আগে থেকেই যেন পড়াশোনা করে এসেছিল ব্রুগা। ফলে বলের দখল সিটির কাছে থাকলেও ব্রুগার খেলোয়াড়রা মাঠের ফাঁকা জায়গাগুলোর দখল নিয়ে নেয়। যে কারণে প্রতিপক্ষের অ্যাটাকিং থার্ডে তেমন ভীতিই তৈরি করতে পারছিল না গার্দিওলার দল।

প্রথমার্ধে কয়েকবার আক্রমণে গেলেও, সেগুলো গোল এনে দেয়ার জন্য মোটেই যথেষ্ট ছিল না। এর মধ্যেও ১৬ মিনিটে গুন্দোয়ান বল জালে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু তার সেই গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে।

সিটির অল-আউট আক্রমণের বিপরীতে ব্রুগা পুরোপুরি প্রতি-আক্রমণ নির্ভর লো-ব্লক ফুটবল খেলতে শুরু করে। লং পাস এবং দুই উইংকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে তারা। প্রথম দিকে ব্যর্থ হলেও শেষ পর্যন্ত ঠিকই কাজ করে এই কৌশল। ৪৫ মিনিটে তেমনই এক আক্রমণ থেকে রাফায়েল ওনেইদিকা গোল করে এগিয়ে দেন ব্রুগাকে। প্রথমার্ধজুড়ে বুদ্ধিদীপ্ত ফুটবল খেলা ব্রুগা এই গোলে নিজেদের কাজ সহজ করলেও সবকিছু জটিল হয়ে ওঠে সিটির জন্য। নিশ্চিতভাবে জিততে হবে এমন ম্যাচে প্রথমার্ধেই পিছিয়ে পড়ে সিটি।

বিরতির পর ভাগ্য বদলাতে গুন্দোয়ানের পরিবর্তে সাভিনিওকে নামান গার্দিওলা। একাদশে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি খেলার ধরনেও পরিবর্তন আনেন সিটি কোচ। এ সময় তাদের আক্রমণগুলো আরও বেশি ধারালো ছিল।

যার ফল আসে ৫৩ মিনিটে। দারুণ এক গোলে সিটিকে সমতায় ফেরান মাতেও কোভাচিচ। একটু পরই অবশ্য ফের পিছিয়ে পড়তে পারতো সিটি। টানা দুই আক্রমণে সিটি রক্ষণকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল ব্রুগা। কিন্তু সে যাত্রায় সিটিকে বাঁচিয়ে দেন এডারসন।

সমতায় ফিরলেও এটুকুই কিন্তু যথেষ্ট ছিল না সিটির জন্য। মূলত জয় ছাড়া আর কোনো ফলই বাঁচাতে পারতো না গার্দিওলার দলকে। যে কারণে ম্যাচ যতই আগাচ্ছিল আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠছিল দলটি। আর সেই আগ্রাসী ফুটবলের ফল তারা পেয়ে যায় ম্যাচের ৬২ মিনিটে।

সিটির আক্রণের চাপ সামলাতে না পেরে নিজেদের জালেই বল জড়ায় ব্রুগা। এই গোল সিটিকে এলিমিনেশন জোন থেকে বের করে আনে। এরপর ৭৩ মিনিটে অবিশ্বাস্যভাবে নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত হয় সিটি। এ সময় পরপর দুইবার সিটির আক্রমণ ঠেকায় ব্রুগা। এই গোলটি পেয়ে গেলে অনেকটাই নির্ভার হতে পারতো সিটি।

সে যাত্রায় না পারলেও ৭৭ মিনিটে ঠিকই তৃতীয় গোলটি আদায় করে নেয় সিটি। এবার গোল করেন বদলি নামা সাভিনিও। এই গোলই মূলত ভাগ্য গড়ে দেয়ি সিটির। বাদ পড়ার অপেক্ষায় থাকা দলটিই অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে পৌঁছে যায় নকআউটের লড়াইয়ে।

/এনকে

Exit mobile version