রিমন রহমান:
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য প্রবেশে শুরু হয়েছে কড়াকড়ি। উচ্চ শুল্কারোপের পথে হাঁটছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্র্যম্প। চীনের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রফতানিতে দিতে হবে বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক। কানাডা ও মেক্সিকোর ক্ষেত্রেও বাড়তি শুল্কারোপের ঘোষণা এসছে। তবে শেষ পর্যন্ত তা এক মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
এমন টালমাটাল অবস্থায় বাংলাদেশ কতটা সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে? বলা হচ্ছে, মার্কিন মুলুকে চীনের কর্তৃত্ব কমলে বাড়বে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা। কিন্তু উৎপাদনে বাড়াতে হবে সক্ষমতা।
এদিকে, দেশের রফতানি বাণিজ্যে বরাবরই শীর্ষস্থান তৈরি পোশাক খাতের। পণ্যের বৈচিত্রকরণে নানামুখী উদ্যোগ থাকলেও ভিন্ন পণ্যের বাজার বড় হয়নি। একক দেশ হিসেবে তৈরি পোশাকের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) বাতিল করার পরও উচ্চশুল্ক দিয়ে দেশটিতে অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। দেশটিতে বছরে রফতানি হয় ৮০০ কোটি ডলারের পোশাক।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শুল্ক আরও বেড়ে যাবে, তখন কিন্তু মার্কিন ক্রেতারা চীন থেকে আমদানি কমিয়ে দেবে। যেখানে চীন বর্তমানে আমেরিকায় রফতানিতে প্রথম স্থানে রয়েছে। তো আমদানি কমে গেলে গ্যাপ তৈরি হবে, তা পূরণ করবে কে? কেউ নাই তো। বাংলাদেশ সেখানে কিন্তু অন্যতম প্রতিযোগী বা প্রতিদ্বন্দী দেশ।
তবে প্রতিযোগিতা করেই ধরে রাখতে হবে অবস্থান। এক্ষেত্রে সামনে দাঁড়াবে ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনামসহ কয়েকটি দেশ। সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।
মোহাম্মদ হাতেম বললেন, আমাদের যতগুলো প্রতিযোগী-প্রতিদ্বন্দী দেশ রয়েছে, তাদের প্রত্যেকের চেয়ে কিন্তু আমরা একটা বড় ধরনের ডিসঅ্যাডভান্টেজ সিচুয়েশনে রয়েছি। যেমন গভীর সমুদ্র বন্দর না থাকায় রফতানিতে সময় বেশি লাগে।
বলা হচ্ছে, বৈশ্বিক বাণিজ্যে টালমাটাল অবস্থায় দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। কমে যেতে পারে পণ্যের চাহিদা।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চীনের রফতানির শতকরা ৮০ শতাংশ হলো হলো নন কটন। ২০ শতাংশ হলো কটন পণ্য। আমাদের প্রায় পুরোটাই তো কটন। সুতরাং সেখানে চীনের সাথে আমাদের যেসব পণ্যের ওভারল্যাপ হবে, কেবলমাত্র সেখানেই কিছুটা হয়তো অতিরিক্ত সুবিধা পাবো। যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের ওপর উচ্চ মূল্যস্ফীতির যে চাপটা পড়বে, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এটার যে প্রভাব সেটি কিন্তু নেতিবাচক।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র থেকে গড়ে আড়াইশ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। আর চীন থেকে বছরে গড়ে আমদানির পরিমাণ দেড় হাজার কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য।
/এমএন
Leave a reply