Site icon Jamuna Television

ইউক্রেনের নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হবে ইউরোপ?

আজ হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে আয়োজিত বৈঠকে দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার চুক্তি সইয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। ইউক্রেন এ পর্যন্ত নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছে মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা ব্যাপক সামরিক সাহায্যের কারণে, যা দিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ট্রাম্পের সাথে জনসম্মুখে বাগ্‌বিতণ্ডায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে যায়।

এমন অবস্থায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হতে পারে ইউরোপ বলে দাবি করছেন বিশ্লেষকরা। এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম পলিটিকো এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সমর্থন হারানো জেলেনেস্কির জন্য বড়সড় ধাক্কা। তবে ইউরোপীয় মিত্রদের সাহায্যে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার উপায় আছে ইউক্রেনের। রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াই ইতিমধ্যেই চতুর্থ বছরে পা দিয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করেছে, তার বিনিময়ে ট্রাম্প ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের ওপর আমেরিকার অধিকার চেয়েছেন।

কিয়েভভিত্তিক গবেষণা সংস্থা থার্ড সেক্টর অ্যানালিটিকাল সেন্টারের পরিচালক অ্যান্দ্রি যলোতারেভ বলেন, মার্কিন সামরিক সাহায্য ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল অস্ত্রের মজুত রয়েছে এবং তারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করে।

অ্যান্দ্রি যলোতারেভের মতে, ইউরোপ যদিও অত্যাধুনিক অস্ত্র ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম তৈরি করে, তারপরও যুক্তরাষ্ট্র সাহায্য বন্ধ করে দিলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য মিলে কেবল সেই ঘাটতির আংশিক পূরণ করতে পারবে।

তাদের প্রচেষ্টা নেতিবাচক প্রভাবগুলো কমাতে পারবে, কিন্তু খারাপ পরিণতি এড়াতে পারবে না। এটি শুধু অনিবার্য পরিণতিকে বিলম্বিত করবে। তা ছাড়া, এই মুহূর্তে ইউরোপের সামরিক ও অর্থনৈতিক অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়।

অ্যান্দ্রি যলোতারেভের ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্রের শক্তির একটি উৎস হচ্ছে তারা যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সেটি আসে একটি কেন্দ্রীভূত প্রক্রিয়া থেকে, যেটা তারপর ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়।

ইউরোপের সম্ভাবনা ও শক্তি ছড়ানো ছিটানো। তা ছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর রাজনৈতিক পরিস্থিতিও বেশ অস্থির। ফলে ইউরোপীয়রা (রাশিয়ার সঙ্গে বিবাদে) তাদের সুবিধাগুলো কাজে লাগাতে পারে না।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠনে অর্থায়নের একটি বড় অংশ ইউরোপের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ থেকে আসবে। কিছু হিসাব অনুযায়ী, এ ক্ষেত্রে ৫০ হাজার কোটি ডলার থেকে ২ হাজার লাখ কোটি ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তবে যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হবে এই খরচ ততই বাড়বে।

অর্থনীতিবিদ অ্যালেক্সে বায়ের মতে, যুদ্ধ-পরবর্তী ইউক্রেনের পুনর্গঠন রাশিয়ার অর্থেই হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ বা কোনো শুল্কের মাধ্যমে এই তহবিল আদায় করা যেতে পারে। ক্ষতিপূরণে রাজি করা না গেলে মস্কোর তেল, গ্যাস ও অন্যান্য খনিজ সম্পদের ওপর শুল্ক আরোপ করা যেতে পারে।

/এআই

Exit mobile version