Site icon Jamuna Television

সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও কী একই দিনে ঈদ পালন সম্ভব?

গোটা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও কী একই দিনে ঈদ পালন সম্ভব? এমন প্রশ্ন নতুন নয়। ২৯ রমজানের দিন শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখতে প্রতি বছরই আয়োজন থাকে সরকারি চাঁদ দেখা কমিটির। চাঁদ দেখা না গেলে, পূর্ণ হয় ৩০ রোজা। বহু বছর ধরে এ রীতি মেনেই দেশে নির্ধারণ হয় ঈদের দিন।

তবে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাক বা না যাক- চাঁদপুর, বরিশাল, চট্টগ্রামসহ কিছু এলাকায় হানাফী মাযহাব অনুসারীদের একটি অংশ তাকিয়ে থাকেন সৌদি আরবের দিকে। দেশটির সাথে একই দিন পালনের পক্ষে তারা। এর স্বপক্ষে কোরআন-হাদিসের ব্যাখাও দেন তারা।

আঞ্জুমানে জাঁহাগিয়া শাহ সুফি মমতাজিয়া ট্রাস্টের প্রধান সমন্বয়ক গোলাম রাব্বানী বলেন, হানাফী-মালেকী-হাম্বলী: তিনটি মাজহাবের অভিমত হচ্ছে পৃথিবীর কোথাও যদি চাঁদ দেখা যায় এবং এই সংবাদ যদি বিশ্বাসযোগ্য সূত্রে পৃথিবীর অপর প্রান্তে পৌঁছে, তাহলে তারা রোজা রাখবে এবং ঈদ করবে।

তবে খালি চোখে চাঁদ দেখা যাওয়ার পরই শুরু হয় হিজরি সনের নতুন চন্দ্র মাস। বহু ধর্মীয় নেতা নির্ভর করেন এই বিধানের ওপর।

ইসলামী চিন্তাবিদ ড. গিয়াসউদ্দিন তালুকদার জানান, যেহেতু আল্লাহ’র নবীর নির্দেশ চাঁদ দেখে রোজা ও ইফতার করার; এক্ষেত্রে বিজ্ঞানের আলকেও চাঁদ দেখার ব্যাপারে যদি কোন বর্ণনা থাকে সুনির্দিষ্টভাবে, সেটিকে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোন মতপার্থক্য সৃষ্টি হওয়ার উদ্রেগ সেখানে নেই।

আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের মাধ্যমে হিসেব-নিকেশ করেই এখন জানা যায়, কোন দেশে কখন দেখা যাবে নতুন চাঁদ। তাই সহজেই বির্তক এড়ানো সম্ভব।

বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিংক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী বলেন, চাঁদের গতিপথ দেখে আমরা অনেকটাই ধারনা পেতে পারি, এটি কখন কথায় থাকবে।

অনুসন্ধিৎসু চক্র বিজ্ঞান সংগঠনের সভাপতি আজহারুল হক সেলিম জানান, যদি ড্রোন দিয়ে চাঁদ দেখার ইচ্ছে পোষণ করেন, তাহলে আরেকটু বেশি দেখা যাবে। সুতরাং দেখার ব্যাপারটা সম্পূর্ণ ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে।

ইসলামের বিধান মেনেও একই দিন ঈদ পালন সম্ভব- ধর্মীয় চিন্তাবিদদের কেউ কেউ এমনটা বললেও তারা স্পষ্ট করেছেন এই সিদ্ধান্ত আসতে হবে রাষ্ট্র কিংবা ওআইসি থেকে।

ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম বলেন, যদি সুযোগ থাকে একসাথে করার, তাহলে সেটি উত্তম। যেহেতু রোজা একটি সামাজিক ইবাদত, সেজন্য রাষ্ট্রের একটি বিষয় রয়েছে।

চন্দ্রমাসের ওপর নির্ভর করে রোজা এবং ঈদ পালন করেন মুসলিমরা। ২০১৬ সালে ইস্তাম্বুলে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে মুসলিমদের একটি বর্ষপঞ্জির মধ্যে নিয়ে আসার পক্ষে মত দিয়েছিলেন ৫০টি দেশের ধর্মীয় পণ্ডিত এবং বিজ্ঞানীরা। তবে তেমনটা না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে ঈদ পালনের আহ্বান জানালেন আলেমদের কেউ কেউ।

/এআই

Exit mobile version