ট্রাম্পের শুল্কারোপে প্রাথমিকভাবে ক্ষতিতে পড়বে না বাংলাদেশ: বিশ্লেষক মত

|

সিনিয়র করেসপনডেন্ট:

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিশ্বকে চমকে দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার সেই সিদ্ধান্ত আসলো বাংলাদেশের বিপরীতে। পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে এতদিন ১৫ শতাংশ কর দিতে হলেও এখন দিতে হবে ৩৭ শতাংশ।

এমন সিদ্ধান্তে ভড়কে যাবার কোনো কারণ নেই বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা। যুক্তরাষ্ট্রের কর নীতিতে সিদ্ধান্ত হলেও তা পরিবর্তনের সুযোগ থাকে বলে মত তাদের।

স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে চাপ তৈরি করতে পারলে নীতি পরিবর্তন করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
তাই হতাশ না হয়ে সরকারকে কার্যকরী ভূমিকা রাখার পরামর্শ আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেছেন, আমরা যেহেতু এখনো পর্যন্ত মাঝারি ও কম দামের পণ্যগুলো পাঠাই, তাই সেখানে হয়তো বড় রকমের কোনো ধাক্কা এই মুহূর্তে আসবে না। কিন্তু মুশকিলটা হবে দীর্ঘ মেয়াদে। কারণ, এটার কারণে যে অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে ট্যারিফ যুদ্ধ শুরু হয়েছে এবং প্রত্যেকেই এখন বিভিন্ন রকমের নেগোসিয়েশন করবেন। এই নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যে ধরনের এক্সেস পাবেন সেইটার সাথে আমাদেরকে প্রতিযোগিতা করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত তুলার মাধ্যমে তৈরিকৃত পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে কর ছাড়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেছেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। এক্ষেত্রে জোরালো লবিং চালানোর পরামর্শ দিলেন তিনি।

মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ট্রাম্প কিন্তু এ ধরনের একটা ঈঙ্গিতও দিয়েছে, তাদের দেশের কাঁচামাল দ্বারা তৈরি পণ্য যদি আমরা রফতানি করি, তাতে একটা নেগোসিয়েশন করে আমরা কিছু পেতে পারি। এ নিয়ে আমরা অনেকদিন যাবত বলে আসছি, কিন্তু এখন এটার জন্য একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। একটা দ্বি-পাক্ষিক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি আমরা করতে পারি যে, তাদের কাঁচামাল দ্বারা তৈরি পণ্য আমরা রফতানি করবো, তাতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে।

পোশাক রফতানি খাতে প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের প্রস্তুতি পর্যাপ্ত নেয়। আর ভিয়েতনাম স্বল্প মূল্যের পোশাক তৈরি করে না। তাই দেশ দুইটির পক্ষে শিগগিরই বাংলাদেশের বাজার দখল করা সম্ভব নয় মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

যদিও দেশ দুইটি কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবে, চালাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ নতুন কী অফার করতে পারে, সেটি নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন অধ্যাপক সাহাব এনাম খান। তিনি বলেছেন, তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আইনপ্রণেতারা এগুলোকে ক্রিটিসাইজ করছেন এবং সেই ক্ষেত্রে বেশ কিছু লিগ্যাল প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। পরিবর্তনের যথেষ্ট জায়গা আছে, সেই জায়গাতে ইফেক্টিভ ডিপ্লোমেসি, প্রো-অ্যাক্টিভ ডিপ্লোমেসি এবং সেই সাথে এগ্রেসিভ ডিপ্লোমেসিতে যেতে হবে। এখন এটা আমরা যত দ্রুত করতে পারি তত ভালো।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply