সেবা ও কর্মের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে নিজেকে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু সোমবার (২১ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘ কর্ম জীবনে সমাজের বিভিন্ন স্তরে করে গিয়েছেন সংস্কার। রক্ষণশীল মনোভাব থেকে বের হয়ে বিশ্ববাসীকে শান্তির বার্তা দিয়ে গেছেন আজীবন।

১৯৩৬ সালে আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে ইতালীয় অভিবাসী পরিবারে জন্ম নেন জর্জ মারিও বার্গোগ্লিও (পোপ ফ্রান্সিস)। ক্যাথলিক চার্চের দুই হাজার বছরের ইতিহাসে প্রথম লাতিন আমেরিকান এবং জেসুইট সম্প্রদায়ের সদস্য হিসেবে পোপ নির্বাচিত হন তিনি।

দায়িত্ব গ্রহণের পর, এই আর্জেন্টিনীয় পোপ দ্রুত একজন আধুনিক সংস্কারক হিসেবে সুনাম অর্জন করেন। অভিবাসন, যুদ্ধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো মানবিক সংকটে তার স্পষ্টভাষী অবস্থান বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয়।
ধর্মযাজকদের মধ্যে অভিজাত মানসিকতা দূর করতে সচেষ্ট হন তিনি। এছাড়াও বিবাহবিচ্ছিন্ন ও সমকামী ক্যাথলিকদের প্রতি সহানুভূতিশীল দৃষ্টিভঙ্গির আহ্বান জানান পোপ। ভ্যাটিকানের আর্থিক দুর্নীতি দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেন তিনি।

শিশুদের যৌন নির্যাতন কেলেঙ্কারিতে জড়িত যাজকদের জবাবদিহিতার আইন প্রণয়ন করেন পোপ ফ্রান্সিস। নারীদের জন্য ভ্যাটিকানে বর্ধিত ভূমিকার সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। এছাড়াও সমকামী দম্পতিদের আশীর্বাদ প্রদানের অনুমতি দেন পোপ।
অন্যদিকে, প্রার্থনার জন্য গির্জাকে ‘সবার জন্য উন্মুক্ত’ করার ঘোষণা দেন তিনি। এছাড়াও মুসলিম বিশ্বের সাথে সেতুবন্ধন তৈরির জন্য বেশ তৎপর ছিলেন তিনি। রাশিয়া ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেন তিনি।
৮৭ বছর বয়সী পোপ ফ্রান্সিসের শারীরিক দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও, তিনি ক্যাথলিক চার্চকে নিয়ে গিয়েছিলেন এক অনন্য উচ্চতায়। তার সংস্কারগুলো চার্চের ভবিষ্যৎ গঠনে গভীর প্রভাব রাখবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
সূত্র: সিএনএন, রয়টার্স, বিবিসি নিউজ
/এআই
Leave a reply