Site icon Jamuna Television

কাশ্মীর উত্তেজনায় ভারত-পাকিস্তানকে সংযত হওয়ার আহ্বান চীনের

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করছে ভারত। হামলাকে কেন্দ্র করে দু’দেশের মধ্যে চলছে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। ইতোমধ্যে, চিরবৈরী প্রতিবেশী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে নয়াদিল্লি। ভারতের বেশ কয়েকটি কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়ার একদিন পর পাল্টা ব্যবস্থার ঘোষণাও দিয়েছে পাকিস্তান।

এ ঘটনার জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ ও কুপওয়ারা জেলার সীমান্তে লাইন অফ কন্ট্রোলে (ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত রেখা, যা জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলকে দুটি অংশে বিভক্ত করে) টানা চতুর্থ রাতেও গোলাবর্ষণ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে জরুরি ভিত্তিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে চীন।

স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ এপ্রিল) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেন, ‘আমরা ভারত ও পাকিস্তানকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর এবং আঞ্চলিক শান্তি-স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে যৌথ প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানাই’।

তিনি আরও বলেন, চীন পরিস্থিতি শান্ত করতে সহায়ক সকল পদক্ষেপকে স্বাগত জানায়।

এদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, গতকাল রোববার (২৭ এপ্রিল) ও সোমবার (২৮ এপ্রিল) স্থানীয় সময় রাতে পাকিস্তান সেনা ঘাঁটি থেকে লাইন অফ কন্ট্রোল জুড়ে ‘অপ্ররোচিত গুলিবর্ষণ’ শুরু করে।

তবে গুলিবর্ষণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ইসলামাবাদ এখনও গুলিবর্ষণের ঘটনা নিশ্চিত করে কোন ধরনের বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে, ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী কাশ্মীরে হামলার পর থেকে সারাদেশে একাধিক সামরিক মহড়া পরিচালনা করেছে। ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে দেশটির এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশজুড়ে স্বাভাবিক প্রস্তুতিমূলক অনুশীলন চলছে।

ভারতের এই মহড়াগুলোকে কূটনৈতিক ভাষায় ‘প্রতিরোধমূলক শক্তি প্রদর্শন’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সামরিক মহড়ার লক্ষ্য পাকিস্তানকে চাপে রাখা এবং অভ্যন্তরীণভাবে জনমনে আত্মবিশ্বাস জাগানো।

সন্ত্রাসী হামলার জেরে উভয় দেশ আর্থিক নিষেধাজ্ঞা, কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস এবং সীমান্তে সেনা সমাবেশ বৃদ্ধিসহ নানান ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বর্তমান পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রিত’ স্তরে রয়েছে, এমনটি বলার সুযোগ খুবই সীমিত। কারণ— যেকোনো ধরনের বড় ঘটনায় তা দ্রুত ‘পূর্ণ যুদ্ধে’ রূপ নিতে পারে। যেহেতু দু’দেশের কাছেই পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, তাই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।

উল্লেখ্য, গত চার রাত ধরে লাইন অফ কন্ট্রোলে দুই দেশের মধ্যে গোলাবিনিময় চলছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে পাকিস্তান ও ভারতকে সংঘাত প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে। তবুও দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি শীতল হচ্ছে না, বরং বেড়েই চলেছে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছে, এই উত্তেজনা যদি আরও বাড়ে, তা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

/এআই

Exit mobile version