স্টাফ করেসপনডেন্ট, শেরপুর:
স্ট্রোক কিংবা হার্টের রোগ, দাঁতের ব্যথা থেকে শুরু করে বাত—সব রোগই নাকি সারবে কেবল ৪ বছরের শিশুর ফুঁ দেয়া তেল-পানিতে! কবিরাজির এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছে একটি পরিবার।
ঘটনাটি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার দর্জি ও কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াহাবের পরিবারে। গুজব ছড়িয়েছে, তার ৪ বছরের সন্তানের ফুঁ দেয়া তেল ব্যবহার ও পানি পানে রোগমুক্তি হচ্ছে।
স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, মাস দুয়েক আগে মায়ের পুরোনো পায়ের ব্যথার জন্য বুনো পাতা কুড়িয়ে আনে শিশুটি। ব্যথা সেরে যাওয়ার খবর আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এক কান দু’কান হতে হতে গুজব ছড়িয়ে যায় পুরো এলাকায়। এরপর নানা সমস্যা নিয়ে প্রতিবেশীরা আসতে থাকেন।
স্থানীয় এক ব্যক্তি দাবি করেন, যার যার রোগ সেই নিয়তে এখানে পানি-তেল পড়া নিতে আসেন। পরে সবাই ভালো হয়ে যান। এক নারীর দাবি, তার ভাতিজা শিশুর তেল পড়া নিয়ে ব্যথার উপশম পেয়েছেন। যদিও কেউ-ই নিজে উপকার পেয়েছেন, এমনটা বলতে পারেননি।
স্বজনদের দাবি, শিশুটির কোনো বিশেষ ক্ষমতা আছে, এমন কখনও তারা প্রচার করেননি। আর দশটা শিশুর মতোই সে। কোথা থেকে এমন গুজব ছড়ালো, তা তারা জানেন না।
শিশুর বাবা বলেন, সন্তানকে নিয়ে কোনো ব্যবসা করার মানসিকতা তাদের নেই। রাত-দিন শত শত মানুষের ভিড়ে তারাও বিরক্ত। ছেলের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েই এখন তারা দুশ্চিন্তায়।
তিনি আরও বলেন, কীভাবে এই ঘটনা ভাইরাল হয়েছে, তা জানেন না। এরপর থেকেই মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। কারও জটিল কোনো রোগ ভালো হয়েছে, এমন খবরও তিনি জানেন না।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে কথিত চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ। তিনি বলেন, ‘চার বছরের ছোট্ট শিশুটিকে প্রথম যখন দেখি, তখন সে মোবাইল নিয়ে খেলছিল। পুরো পরিবারের কারও মাঝে ব্যবসায়িক মানসিকতা দেখিনি। শিশুর বাবাও বলেছেন, তিনি এই উটকো ঝামেলা থেকে মুক্তি চান।’
ইউএনও বলেন, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে ঝাড়-ফুঁকের কোনো ভিত্তি নেই। তাই কারও কোনো রোগ হলে নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে সেবা নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
/এসআইএন
Leave a reply