Site icon Jamuna Television

আজ রাজবাড়ী শত্রুমুক্ত দিবস

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
১৮ ডিসেম্বর রাজবাড়ী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সারা দেশ যখন বিজয়ের উল্লাসে মেতে উঠেছে, তখন রাজবাড়ী শহর পাকিস্তানি খানসেনাদের দোসর অবাঙালি বিহারী দিয়ে অবরুদ্ধ। রাজবাড়ী তখনও তাদের দখলে।

রাজবাড়ী শহর মূলত রেলওয়ের শহর। এ কারণে এখানে রেলওয়েতে কর্মরত প্রায় ১০/১৫ হাজার অবাঙালি পরিবারের বসবাস ছিল। নিউ কলোনি, আঠাশ কলোনি, রেল কলোনি, বিনোদপুর ও লোকোশেড এলাকা ছিল তাদের একছত্র দখলে।

রাজবাড়ী জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বার জানান, ৭১-এর ২৫ মার্চের কালো রাত থেকে পাকিস্তানী খানসেনারা ঢাকায় হামলার মধ্য দিয়ে গণহত্যা শুরু করলেও গোয়ালন্দ ঘাট পদ্মা নদী পার হয়ে রাজবাড়ীতে গানবোট নিয়ে প্রথম প্রবেশ করে ২১ এপ্রিল। এদিন পাকিস্তানী বাহিনীকে বাধা দেওয়ার যুদ্ধে প্রথম শহীদ হন গোয়ালন্দের আনছার কমান্ডার ফকির মহিউদ্দিনসহ প্রায় শতাধিক বাঙালি। এর পর ২২ নভেম্বর রাজবাড়ীর আলাদীপুর সেতুর কাছে সম্মুখ যুদ্ধে প্রথম শহীদ হন মুক্তিযোদ্ধা সহকারী কমান্ডার আব্দুল আজিজ খুশি। রাজবাড়ীর বাঙালিদের ওপর প্রথম থেকেই এই অবাঙালি বিহারীরা রাজাকার, আলবদরদের সমন্বয়ে গঠিত বেশ কয়েকটি বাহিনী হামলা, বাড়িঘর পোড়ানো, ধর্ষণসহ হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। নভেম্বরের শেষের দিকে পাকিস্তানী সেনারা ফরিদপুরে চলে যায়।

এসময় মুক্তিযোদ্ধারাও চারদিক থেকে রাজবাড়ী আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়। রাজবাড়ীকে মুক্ত করার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ছুটে আসেন। কমান্ডার কামরুল ইসলাম লালী, রফিকুল ইসলাম, মোঃ জিল্লুল হাকিম, মো. আব্দুল মতিন মিয়া, সাচ্চু, যশোরের আকবর হোসেন, সিরাজ আহম্মেদ, ইলিয়াছ মিয়া, নুরুন্নবী আলম, আবুল হোসেন বাকাউল, প্রফেসর রবের বাহিনীরা মিলে একযোগে বিহারী অধ্যুষিত এলাকাগুলি ঘিরে ফেলেন। শুরু হয় প্রচন্ড যুদ্ধ।

১৪ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে অবাঙালি বিহারীদের তুমুল যুদ্ধের পর ১৮ ডিসেম্বর রাজবাড়ী মুক্ত হয়। এ যুদ্ধে রফিক,শফিক ও সাদি, আরশেদ আলী ও দিয়ানত আলী নামে ৫ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

Exit mobile version