Site icon Jamuna Television

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ড্রোন যুদ্ধের সূচনা?

পাকিস্তানের ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক (ডিজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ দাবি করেছেন যে ভারত গতকাল বুধবার (৭ মে) রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার (৮ মে) স্থানীয় সময় দুপুর পর্যন্ত ইসরায়েল তৈরি ‘হারোপ ড্রোন’ নিক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে ২৫টি ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে পাকিস্তান। এতে অন্তত একজন নাগরিক নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছে।

কয়েক ঘন্টা পর ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে তারা পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা রাডার লক্ষ্য করেছে এবং লাহোরে একটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘নিষ্ক্রিয়’ করতে সক্ষম হয়েছে।

ভারত আরও দাবি করেছে যে পাকিস্তান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভারত ও ভারত-শাসিত কাশ্মীরে হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল, যা ব্যর্থ হয়েছে।

এই ড্রোন হামলা পারমাণবিক শক্তিধারী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার সর্বশেষ অধ্যায়। এর একদিন আগে ভারত পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যাতে ইসলামাবাদের দাবি অনুযায়ী অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছে। এটি দুই দেশের মধ্যে চারটি যুদ্ধের বাইরে সবচেয়ে বড় হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।

উভয় পক্ষের ভারী গোলাবর্ষণের কারণে বিতর্কিত কাশ্মীর অঞ্চলের সীমান্তবর্তী সম্প্রদায়গুলো এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে অন্নত্র। এমন পরিস্থিতিতে, উভয় দেশই সামরিক অভিযানে ড্রোনের ব্যবহার বাড়াচ্ছে। এতে পারমাণবিক শক্তিধারী দেশ দুটির মধ্যে এই সংঘাত বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সামরিক বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে এই সংঘাত আরও বিস্তৃত যুদ্ধে রূপ নিতে পারে, যদি না উভয় পক্ষ সংযম দেখায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ ও কূটনৈতিক আলোচনার প্রয়োজনীয়তা উঠে আসছে।

এদিকে, ভারতের ব্যবহৃত হারোপ ড্রোনগুলো ইসরায়েলের সরকারি প্রতিরক্ষা কোম্পানি ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (আইএআই) দ্বারা নির্মিত। এগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে শত্রুর রাডার ও যোগাযোগ ব্যবস্থা শনাক্ত করে আঘাত করতে পারে। ড্রোনগুলো সর্বোচ্চ পাল্লা ১,০০০ কিমি (প্রায়)।এছাড়াও লয়টারিং মিউনিশন (৬-৯ ঘন্টা পর্যন্ত টার্গেটের ওপর চক্রাকারে ঘুরতে পারে) সিস্টেম রয়েছে ড্রোনগুলোতে।

এছাড়াও হারোপ ড্রোনগুলোর ওয়ারহেড ২৩ কেজি উচ্চ-বিস্ফোরক। যার গতি ঘণ্টায় ৪৬০ কিলোমিটার। হারোপ প্রি-প্রোগ্রামড টার্গেট বা রিয়েল-টাইম অপারেটর কন্ট্রোলে আঘাত করতে পারে। অন্যদিকে, শত্রুর এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, রাডার, যোগাযোগ কেন্দ্র বিশেষভাবে নিশানা করতে সক্ষম হারপ। এগুলো একবার লঞ্চ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টার্গেট ধ্বংস করে।

ভারতের ড্রোন অ্যাটাকের পর পাকিস্তান কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়। তবে, ধীরে ধীরে হামলায় দুই দেশই ড্রোন ব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এই উত্তেজনা ড্রোন যুদ্ধের সূচনাকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

/এআই

Exit mobile version