Site icon Jamuna Television

আড্ডায় প্রিয়জনের সাথে হবে এক কাপ চা?

এই সরল প্রশ্নটির মধ্যেই লুকিয়ে আছে বাংলা সংস্কৃতির এক গভীর আবেগ! এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা শুধু পানীয় নয়—এটি বাঙালির সাংস্কৃতিক ডিএনএ-এর অংশ! সকালের প্রথম চুমুক থেকে রাতের আড্ডা পর্যন্ত, দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

ক্লান্তি দূর করতে, আড্ডা জমাতে কিংবা একাকিত্ব ভাগ করে নিতে চায়ের জুড়ি নেই। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চা পান করার রীতি ভিন্ন, কিন্তু এর মোহময়ী আকর্ষণ সর্বত্রই এক।

চায়ের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করলে প্রথমেই চলে আসে চীনের নাম। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে চীনে প্রথম চায়ের ব্যবহার শুরু হয়। বলা হয়ে থাকে, একদিন সম্রাট শেন নুং গরম পানিতে কিছু পাতা পড়ে যেতে দেখেন। সেই পাতার সুগন্ধ তাকে আকৃষ্ট করে এবং তিনি এটি পান করে এর স্বাদে মুগ্ধ হন। এভাবেই শুরু হয় চায়ের যাত্রা। কালের পরিক্রমায় চা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন সংস্কৃতির অংশ হয়ে ওঠে।

চায়ের ধরনও যেমন বৈচিত্র্যময়, তেমনি এর স্বাদ ও গুণাগুণও ভিন্ন। কালো চা বা ব্ল্যাক টি তার গাঢ় স্বাদ ও সতেজতা দানের জন্য সবার কাছে প্রিয়। অন্যদিকে, গ্রিন টি বা সবুজ চা তার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণের জন্য স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের প্রথম পছন্দ। ওলোং টি একটু ভিন্ন, এটি আংশিকভাবে ফার্মেন্টেড হওয়ায় এর স্বাদে থাকে এক অনন্য মাত্রা। আর হরবাল টি বা ভেষজ চা ক্যাফেইনমুক্ত হওয়ায় যেকোনো সময় পান করা যায়।

চা তৈরির পদ্ধতিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। সঠিক তাপমাত্রায় পানি গরম করা, সঠিক সময় চা পাতা ডুবিয়ে রাখা এবং প্রয়োজনমতো দুধ ও চিনি মেশানো—এসবই চায়ের স্বাদকে পরিপূর্ণ করে তোলে।

চায়ের স্বাস্থ্য উপকারিতাও অনেক। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে এবং হজমশক্তি বাড়ায়। আদা চা গলা ব্যথা ও সর্দি-কাশিতে দারুণ কাজ করে। আবার গ্রিন টি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

বাংলাদেশে চায়ের রয়েছে আলাদা এক সংস্কৃতি। সকালের নাস্তায়, অফিসের বিরতিতে কিংবা বন্ধুদের আড্ডায় চা ছাড়া যেন চলেই না।

এক কাপ চা শুধু তৃষ্ণা নিবারণ করে না, বরং এটি আমাদের দেয় এক মুহূর্তের প্রশান্তি। তাই ব্যস্ত জীবনের মাঝেও একটু সময় বের করে গরম চায়ের কাপে চুমুক দিতে ভুলবেন না। কারণ, জীবনের ছোট ছোট আনন্দই তো আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়!

/এআই

Exit mobile version