বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) বিশ্ব প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া দিবস ২০২৫ উদযাপিত হয়েছে। দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল— ‘প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন, জানুন’। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে) ঢামেকে দিবসটি পালিত হয়।
বক্তারা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, সঠিক তথ্য ও সচেতনতা আগামী দিনে প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া থেকে জীবন রক্ষা করতে পারে। আজকের এই দিনে, আসুন আমরা অঙ্গীকার করি—সচেতনতা ছড়াবো, মায়েদের পাশে দাঁড়াবো এবং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবো।
শুরুতেই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক কামরুল আলম, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. আসাদুজ্জামান, স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রাশিদা খানম, মাতৃ-ভ্রূণ মেডিসিন ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক নাসরিন আক্তারসহ চিকিৎসক, নার্স এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। ঢামেকের মাতৃ-ভ্রূণ মেডিসিন ইউনিটের উদ্যোগে অনুষ্ঠানটি উদযাপিত হয়।
অনুষ্ঠানে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা এবং প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া রোগের উপসর্গ, চিকিৎসা পদ্ধতি ও প্রতিরোধ বিষয়ে একটি নাটিকার মাধ্যমে চিত্র তুলে ধরা হয়। নাটকটি রচনা ও পরিচালনা করেন মাতৃ-ভ্রূণ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আরিফা শারমিন মায়া।
উল্লেখ্য, প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া একটি গুরুতর গর্ভকালীন সমস্যা, যা উচ্চ রক্তচাপ এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতির মাধ্যমে প্রকাশ পায়। বিশ্বজুড়ে বহু মা ও নবজাতকের মৃত্যু বা জটিলতার পেছনে এই রোগ দায়ী। আমাদের দেশে মাতৃমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ হলো এক্ল্যাম্পসিয়া। এটি এমন একটি গর্ভকালীন রোগ, যা অনেক সময় পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই দেখা দেয়। কিন্তু সময়মতো শনাক্ত করা গেলে এবং যথাযথ চিকিৎসা প্রদান করা হলে বহু জীবন রক্ষা সম্ভব।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সঠিক সময়ে গর্ভকালীন চেকআপ করালে উপসর্গ, ওজন, রক্তচাপের মাত্রা, রোগীর পূর্ববর্তী কোনো জটিলতা (যেমন: ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ), পারিবারিক ইতিহাসে উচ্চ রক্তচাপ বা প্রসবের সময় খিঁচুনি হয়েছিল কি না—এসব তথ্যের ভিত্তিতে একটি ঝুঁকি মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়, যাকে ‘জেস্টোসিস স্কোর’ বলা হয়।
যদি স্কোর ৩ বা তার বেশি হয়, তবে সেই মায়ের পরবর্তীতে প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ সময় একটি সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
/এসআইএন
Leave a reply