Site icon Jamuna Television

গাইবান্ধায় বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ যুবলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ইলিয়াস মিয়াকে (৪০) কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। 

শুক্রবার (৬ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ইউনিয়নের রামভদ্র খানাবাড়ি এলাকায় হামলার শিকার হন তিনি। পরদিন শনিবার বিকেল ৪টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

এর আগে, হামলার শিকার ইলিয়াসকে উদ্ধারের পর তিনি স্থানীয়দের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সময়েও তিনি জানিয়ে যান কারা তার উপর হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে মোবাইলে ধারণ করা ইলিয়াসের বক্তব্যের পৃথক দুটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

নিহত ইলিয়াস মিয়া উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র খানাবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল ব্যাপারীর ছেলে। তিনি সর্বানন্দ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। 

নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে নিজের মৎস্য খামার থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিলের রাস্তায় ইলিয়াসকে পথরোধ করে নিষিদ্ধ যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় সুমন মিয়া, জুবায়ের ও সাজু মিয়াসহ ৮-১০ জন। এ সময় লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ইলিয়াসের হাত ও পা ভেঙে দেয় তারা। পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে রক্তাক্ত ও জখম করে ফেলে। ঘটনাটি টের পেয়ে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ইলিয়াসকে রাস্তার কাদামাটিতে ফেলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

নিহত ইলিয়াসের বড় ভাই মোজাম্মেল হকের অভিযোগ, যুবলীগ নেতা সুমন মিয়ার নেতৃত্বে ইলিয়াসের উপর হামলা চালানো হয়েছে। তারা ইলিয়াসের হাত-পা ভেঙে দেয় এবং কুপিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলে। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষে মারা যায় ইলিয়াস।

তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই ইলিয়াসের সাথে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল সুমন মিয়াসহ স্থানীয় যুবলীগ নেতাকর্মীদের। আওয়ামী লীগের পতনের পর নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থাকলেও সুমন মিয়া ইলিয়াসকে হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই জেরে পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে যুবলীগের সুমন মিয়া, জুবায়ের ও সাজু মিয়াসহ ৮-১০ জন। হামলাকারী সুমন মিয়াসহ সকলের বাড়ি একই গ্রাম রামভদ্র খানাবাড়ি। তারা সর্বানন্দ ইউনিয়ন যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় এবং নানা অপকর্ম করে আসছে। এ সময়, দ্রুত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি জানান তিনি।  

বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কমকতা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ইলিয়াস মিয়া। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ সময় নিহতের বাড়িতে গিয়ে তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলা হয়। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে। সেইসাথে অভিযুক্তদের গ্রেফতারেও চেষ্টা চলছে। এ সময়, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।

/এএইচএম

Exit mobile version