Site icon Jamuna Television

চলমান সংঘাতে মিত্রদের পাশে পাবে ইরান?

মার্কিন-ইসরায়েলি হামলার জবাব দিতে ইরানের পাশাপাশি তার বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর ভূমিকা কী হবে— এমন প্রশ্ন ওঠা এখন খুবই স্বাভাবিক। তবে, বাস্তবতা হলো ইরান-ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র ত্রিকোণ সম্পর্কে ক্ষতিগ্রস্ত তেহরানের পাশে শুরু থেকেই ছিলো না মুসলিম দেশগুলো। যদিও পাশে থাকার কথা জানিয়েছিল অপর দুই মিত্র পরাশক্তি রাশিয়া ও চীন। বিশ্লেষকদের মতে, প্রকাশ্যে না হলেও গোপনে ইরানকে সহায়তা করতে পারে রাশিয়া।

ইরানের গুরুত্বপূর্ণ তিন পারমাণবিক কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার মধ্য দিয়ে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে পুরোপুরি জড়িয়ে গেছে ওয়াশিংটন। প্রশ্ন উঠছে, সংকটকালে কি মিত্রদের পাশে পাবে তেহরান?

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের শুরু থেকেই নীরব ভূমিকায় আরব বিশ্ব। সংঘাতের নিন্দা জানিয়েই দায় সারছে কেউ কেউ। অনেকে সেই নিন্দাও জানায়নি। বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দূরত্ব তৈরি করতে চায় না আরবরা। আর এ কারণেই তাদের এমন বিতর্কিত অবস্থান। কোণঠাসা অবস্থানে আছে ইরান সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতিরা। আর তাই একাই লড়তে হচ্ছে ইরানকে।

চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়ার পর প্রশ্ন উঠছে, ইরানের ঘনিষ্ঠ দুই মিত্র চীন ও রাশিয়ার অবস্থান কী হবে? ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে বিপুল ড্রোন সহায়তা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে খামেনি প্রশাসনের বিরুদ্ধে। সেই ইরানই যখন বিপদে তখন কি এগিয়ে আসবে রাশিয়া? যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যকে ঝুঁকিতে ফেলে চীনও কি তেহরানের পাশে দাঁড়াবে কিনা, তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা।

বিশ্লেষকরা বলছে, ইরানের জন্য অন্ধকারে প্রদীপ হতে পারে রাশিয়া। মধ্যপ্রাচ্যে আরেক মিত্র সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের পর ইরানই একমাত্র দেশ যাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের। দেশটির পতন মস্কোর জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে। এমনকি আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পতন হলে প্রশ্ন উঠতে পারে পরাশক্তি হিসেবে রাশিয়ার অবস্থান নিয়েও। আর তাই বলা হচ্ছে, প্রকাশ্যে ইরানের পাশে না দাঁড়ালেও গোপনে তাদের সহায়তা করতে পারেন পুতিন।

চীনের অবস্থান কি হবে তা নিয়ে অবশ্য রয়েছে ধোঁয়াশা। বরাবরই মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেছে দেশটিকে। তবে সরাসরি সংঘাতে জড়ানোর সম্ভাবনা কম বলেই মত বিশ্লেষকদের।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের বিপরীতে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর সক্রিয় যোদ্ধাদের প্রধান কার্যালয় ‘খাতাম আল-আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দফতর’কে হুঁশিয়ারি দিতে দেখা যায়। এখন দেখার বিষয়, নিজেদের দেয়া বিবৃতি কতটা আমলে নেয় ইরান, এমনকি পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কী করে তারা।

ইরানে মার্কিন হামলার পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ার শঙ্কায় নিজেদের আকাশপথ বন্ধ রেখেছে ইসরায়েল। যদিও এর মধ্যেই কয়েক দফায় সেখানে হামলা চালিয়েছে ইরান। এতে আহত হয়েছে অন্তত ১১ ইসরায়েলি।

/এমএইচআর

Exit mobile version