স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, পটুয়াখালী:
২০২৬ সালের জুলাই থেকে পূর্নাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করবে পায়রা বন্দর। ১৯টি কম্পোনেন্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ বন্দরে রূপান্তরিত হবে বলে জানিয়েছেন বন্দরটির চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল।
বুধবার (২৫ জুন) সকালে বন্দরের প্রথম টার্মিনাল ভবনের মিলনায়তনে পায়রা বন্দরের উন্নয়ন, অগ্রগতি, সম্ভাবনা এবং অপারেশনাল কার্যক্রম বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও অংশীজনদের মধ্যে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে বন্দরটির চ্যানেলের গভীরতা সাড়ে ছয় মিটারের বেশি। এখানে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পণ্যবাহী মাদার ভেসেল ভিড়তে পারে। মেইনটেন্যান্স ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে এর গভীরতা সাড়ে ১০ মিটার পর্যন্ত উন্নীত করা গেলে অন্যান্য সমুদ্রবন্দরের চেয়ে এটি গভীর হবে এবং বড় জাহাজ এখানে ভিড়তে পারবে। এজন্য দুই বছরের একটি প্রকল্প নেয়া হবে। এর মধ্যেই দুটো ড্রেজার ক্রয় করে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে ড্রেজিং করে খরচ সংকোচন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, পার্শ্ববর্তী দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা হ্যান্ডলিং করেই ড্রেজিংয়ের খরচ মেটানো সম্ভব হবে। দেশের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় রাজধানীর সঙ্গে এর নৌ ও সড়ক পথের দূরত্ব কম থাকায় সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী। নদী পথে ২৪/৭ কনটেইনার পরিবহনের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া ভাঙ্গা টু কুয়াকাটা ৬ লেন সড়ক নির্মিত হলে যানজটবিহীন সড়কপথে কার্গো পরিবহন সুবিধা সৃষ্টি হবে।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ দেশের একক দীর্ঘতম ৬৫০ মিটার জেটি, ৩,২৫,০০০ বর্গমিটার ব্যাকআপ ইয়ার্ড, ১০,০০০ বর্গমিটার আধুনিক সিএফএস শেড, বন্দরের অভ্যন্তরে চ্যানেলে নিরাপদ অবস্থানে একই সময়ে ১৫টি পর্যন্ত বাণিজ্যিক জাহাজের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা থাকায় এই বন্দরে জটবিহীন বার্থিং/আনবার্থিং সুবিধাসহ দ্রুততম সময়ে পণ্য লোডিং/আনলোডিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া পায়রা বন্দরের নিজস্ব টার্মিনালের অপারেশন শুরুর আগেই অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও ইতোমধ্যে পায়রা বন্দর ৫২৯টি বৈদেশিক জাহাজ ও ৩৪২৬টি দেশীয় লাইটারেজ নিরাপদে হ্যান্ডেল করতে সক্ষম হয়েছে এবং এ থেকে সরকার প্রায় ২০৭৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বন্দরকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে এখানে শিল্প ক্ষেত্রে বড় বিনিয়োগ হয়েছে এবং আরও বহু বিনিয়োগ অপেক্ষমাণ আছে। বন্দর পূর্ণাঙ্গভাবে সচল হওয়ার পর বন্দর ও বন্দরনির্ভর যে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে, সেটা দক্ষিণাঞ্চলের একটি তুলনামূলক অনগ্রসর জনপদকে সমৃদ্ধ করা তথা দেশের অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব অবদান রাখবে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বন্দরের অগ্রযাত্রায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তার জন্য তিনি সকলকে আহ্বান জানান।
/এসআইএন

