
লাভলী বিথী:
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন একান্ত বৈঠক করেছেন। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো তাদের সাক্ষাৎ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক, নির্বাচন এগিয়ে আনার গুঞ্জন ও সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের গ্রেফতারের মধ্যে এই বৈঠকের গুরুত্ব বেড়ে গেছে বহুগুণ।
তবে কী নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস ও এ এম এম নাসির উদ্দীনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আসেনি। ফলে কী নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হয়েছে তা নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ।
নির্বাচন ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ সম্পর্কে ধারণা, কমিশনের প্রস্তুতি ও সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের গ্রেফতারে কমিশনের উদ্বেগের বিষয়টিও ওঠে আসতে পারে। এ ধরনের বৈঠক চলমান রাখার পরামর্শও দিয়েছেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ বলেছেন, এই যে পরিস্থিতিটা উদ্ভব হয়েছে, তাতে তো প্রত্যেকেই তার এক্সিট রোড খুঁজবেই। আমার ধারণা যে এই পরিস্থিতিটাও তিনি (সিইসি) ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে শেয়ার করবেন। এ ধরনের পরিস্থিতি হলে নির্বাচন কমিশনের ওপরে যে একটা চাপ পড়তে পারে এই বার্তাটাও তাদেরকে দেবেন বলে আমার মনে হয়। তাদের মধ্যেও তো এক ধরনের অনিশ্চিয়তা কাজ করতেছে। কারণ, সরকারের একেক সময়ে তার অবস্থানের পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি কনফিউজ তো তারাই। নির্বাচনটা কোন সময়ে হতে পারে সে রকম একটা ধারণা তারা পেতে যাচ্ছে।
ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, হয়তো সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন বা সংস্কারের ব্যাপারেও আলাপ হতে পারে। নির্বাচন কমিশনের সাথে আলাপ-আলোচনা করতে হবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। অনেকগুলো আইনে পরিণত করতে হবে। তাদেরকে বলা দরকার, ইসি সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে স্বাধীন। তারা সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, তারা সরকারের নিয়ন্ত্রণে নয়।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মো. আব্দুল আলীম বললেন, প্রচুর রিকমেন্ডশন আছে এবং কিছু কিছু জিনিস আছে ইসি নিজেই করতে পারে। তার জন্য সংসদ বা অধ্যাদেশ দরকার হবে না। হয়তো সিইসি সেগুলো বলে থাকতে পারেন।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির বৈঠককে সাধুবাদও জানিয়েছেন তিনি। তার মতে এই বৈঠকটি আরও আগেই হওয়া দরকার ছিল।
মো. আব্দুল আলীম বললেন, উনারা যখন দায়িত্ব নিলেন তারপর অথবা ঐকমত্য কমিশন গঠনের পরেই আলোচনাটা হলে সরকারের পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে একটা বার্তা যেত কীভাবে কাজ করবে, সংস্কারের যে সুপারিশগুলো আছে সেগুলো নিয়ে ইসি কীভাবে বাস্তবায়নের দিকে ধাবিত হবে। এ কাজটা আরও আগে করলে সুন্দর হতো।
নির্বাচনের দিনক্ষণ কিংবা কমিশনের আস্থা ধরে রাখাসহ বৈঠকের ফলাফল ইতিবাচক হবে বলেও প্রত্যাশা বিশেষজ্ঞদের।
/এমএন



Leave a reply