Site icon Jamuna Television

সমগ্র ইউক্রেন চান পুতিন: আল জাজিরা

ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা চলতি বছরে দেশটিকে বর্ধিত সামরিক সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য বন্ধ থাকার ঘাটতি পূরণ করছে। এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সমগ্র অঞ্চলকে রাশিয়ান ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত করার তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে গত ২৪-২৫ জুন (মঙ্গল ও বুধবার) হেগে অনুষ্ঠিত জোটের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের আগে বলেন, ‘এ মুহূর্তে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডা এ বছরের জন্য ইউক্রেনকে ৩৫ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে’।

গত বছর পুরো বছরে এটি ছিল ৫০ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। এখন অর্ধেক বছর শেষ হওয়ার আগেই তা ৩৫ বিলিয়নে পৌঁছেছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি ইতিমধ্যেই ৪০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।

ইউরোপের এই বাড়তি সহায়তা ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সামরিক সাহায্য না আসার ঘাটতি কিছুটা পূরণ করেছে বলে জানিয়েছে বিশ্লেষকরা।

চলতি বছরের এপ্রিলে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্যাট্রিয়ট মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কিনতে চেয়েছিলেন, যা দিয়ে রাশিয়ার ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা প্রতিহত করা সম্ভব। তবে পরের মাসে ট্রাম্প প্রশাসন প্রথমবারের মতো ইউক্রেনকে অস্ত্র বিক্রি করে।

রাশিয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে ইউক্রেনের মিত্রদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে। শনিবার (২৮ জুন) ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই শর্ত পুনর্ব্যক্ত করেন। এর আগে, গত ২০ জুন পুতিন প্রকাশ্যে বলেন যে, সমগ্র ইউক্রেন দখলের তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা কমেনি।

সেন্ট পিটার্সবার্গ ইকোনমিক ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমি বহুবার বলেছি, রাশিয়ান ও ইউক্রেনীয় জনগণ আসলে এক জাতি। এই অর্থে, সমগ্র ইউক্রেন আমাদের। কিন্তু আমাদের একটি পুরনো প্রবাদ আছে—যেখানে রাশিয়ান সৈন্য পা রাখে, সেটাই আমাদের’।

পরদিন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেন, ‘রাশিয়ান সৈন্য যেখানেই পা রাখে, সেখানে শুধু মৃত্যু, ধ্বংস ও বিপর্যয় নিয়ে আসে’।

এরপর ২১ জুন টেলিগ্রামে পুতিনের বক্তব্যকে ‘সম্পূর্ণ স্পষ্ট’ বলে উল্লেখ করে জেলেনস্কি লেখেন, ‘হ্যাঁ, তিনি সমগ্র ইউক্রেন চান। তিনি বেলারুশ, বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো, মলদোভা, ককেশাস ও কাজাখস্তানের মতো দেশগুলোর কথাও বলছেন’।

জার্মান সেনাবাহিনীর পরিকল্পনাকারীরা পুতিনের সম্প্রসারণবাদকে হুঁশিয়ারি হিসেবে দেখে ১৮ মাস ধরে প্রস্তুতকৃত একটি গোপন কৌশলপত্রে রাশিয়াকে ‘অস্তিত্বের হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন। গত সপ্তাহে ডের স্পিগেল এই নথি ফাঁস করে।

নথিতে বলা হয়েছে, ‘মস্কো ২০৩০ সালের মধ্যে ন্যাটোর বিরুদ্ধে বড় আকারের যুদ্ধের জন্য নিজেদের সামরিক নেতৃত্ব ও প্রতিরক্ষা শিল্পকে প্রস্তুত করছে।”

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মেরৎজ স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) বলেন, ‘আমরা বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোর রাশিয়া সংক্রান্ত সতর্কতাকে দীর্ঘদিন উপেক্ষা করেছি। আমরা এই ভুল স্বীকার করেছি। এই বাস্তবতা থেকে ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। আশেপাশের বিশ্ব শীঘ্রই শান্ত হবে বলে আশা করা যায় না’।

/এআই

Exit mobile version