Site icon Jamuna Television

‘নতুনভাবে আলোচনার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে হামলা বন্ধের নিশ্চয়তা দিতে হবে’

যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের ওপর যেকোনো অতিরিক্ত সামরিক হামলা বাদ দেয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে, যদি তারা কূটনৈতিক আলোচনা পুনরায় শুরু করতে চায়—এমনই বার্তা দিয়েছেন তেহরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তাখত-রাভানচি।

তিনি ব্রিটিশ মিডিয়া বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে ইরানকে আলোচনায় ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, কিন্তু আলোচনা চলাকালে আরও হামলার সম্ভাবনা নিয়ে তাদের অবস্থান ‘স্পষ্ট নয়’।

তাখত-রাভানচি জোর দিয়ে বলেন, ইরান ‘শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে’ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আপস করবে না। তিনি বলেন, ‘সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ও সক্ষমতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে, কিন্তু শূন্য সমৃদ্ধকরণের দাবি করা এবং তা না মানলে বোমা মারা—এটা জঙ্গলের আইন’।

২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইরানের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ৩.৬৭% সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন সেই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলে ইরানও চুক্তির সীমা লঙ্ঘন করতে শুরু করে। বর্তমানে ইরান ৬০% সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করছে, যা আইএইএ-এর মতে অন্তত নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য যথেষ্ট।

তাখত-রাভানচি বলেন, আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য এখনও কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আলোচনা চলাকালে কি আবারও হামলা হবে? যুক্তরাষ্ট্রকে এই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর দিতে হবে’।

তিনি আরও যোগ করেন, ইরান যুদ্ধ চায় না, কিন্তু যেকোনো আগ্রাসনের মোকাবিলায় প্রস্তুত।

ইউরোপীয় নেতাদের প্রতি কঠোর ভাষায় তাখত-রাভানচি বলেন, কিছু নেতা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হামলাকে ‘হাস্যকরভাবে’ সমর্থন করেছেন।

তিনি বলেন, ‘যারা ইরানের সমালোচনা করছেন, তাদের উচিত ছিল আমাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের সমালোচনা করা। যদি তাদের আমেরিকাকে সমালোচনা করার সাহস না থাকে, তাহলে তাদের চুপ থাকা উচিত’।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইরানীয়দের ‘আয়াতুল্লাহ খামেনির শাসন উৎখাতের’ আহ্বান জানালেও তাখত-রাভানচি এটাকে ‘ব্যর্থ প্রচেষ্টা’ বলে উড়িয়ে দেন।

তিনি বলেন, ‘ইরানীয়রা সরকারের কিছু সিদ্ধান্তের সমালোচনা করতে পারে, কিন্তু বিদেশি আগ্রাসনের মুখে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াবে’।

তিনি বলেন, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের ইরানের মিত্র দেশগুলো ‘সংলাপের পরিবেশ তৈরি করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এছাড়াও কাতার বর্তমান যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে’।

/এআই

Exit mobile version