Site icon Jamuna Television

বিএসএফের রোহিঙ্গা পুশ ইন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’

কেবল মিয়ানমার নয়, ভারত থেকেও বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে জাতিসংঘ নিবন্ধিত রোহিঙ্গারা। দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্য থেকে কলকাতা হয়ে তিন মাসে বাংলাদেশে ঢুকেছেন হাজারখানেক রোহিঙ্গা। মৌলভীবাজার-কুমিল্লা ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া সীমান্ত হয়ে তাদের চূড়ান্ত গন্তব্য কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। যারা পালিয়ে এসেছেন তারা বলছেন, পাক-ভারত সংঘাত আর রাজ্যসভার নির্বাচন সামনে রেখে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে কঠোর হয়েছে দেশটি।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনে বাড়তি মাত্রা যুক্ত করেছে পুশ ইন। এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে ভারতে থাকা রোহিঙ্গারাও। এরইমধ্যে কয়েক’শ রোহিঙ্গাকে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠিয়েছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ।

এ কাজে বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের নানা অজুহাতে আটক করে বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় জড়ো করা হয়। এরপর সুযোগ বুঝে রাতের অন্ধকারে ১৫-২০ জন করে পাঠিয়ে দেয়া হয় বাংলাদেশে। যদিও এদের অনেকেই ভারতে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার নিবন্ধিত। এমন ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের অভিযোগ, কাছে থাকা টাকা পয়সাও কেড়ে নেয়া হয়।

পুশ ইনের বাইরেও অনেকে নিজ দায়িত্বে ভারত থেকে এসেছেন বাংলাদেশে। যেমন হায়দারাবাদ ক্যাম্পে দীর্ঘদিন ছিলেন মূসা নামের এক রোহিঙ্গা। কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময়, তাদের চলাফেরায় আসে নানা বিধিনিষেধ। ফলাফল, কর্মহীন হয়ে পড়েন তারা। এ অবস্থায় কক্সবাজারে থাকা বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করে, দালালের মাধ্যমে চলে আসেন বাংলাদেশে।

এর বাইরে বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচন সামনে রেখেও ধরা হচ্ছে মুসলিমদের। সেই গ্রেফতার এড়াতেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলে এসেছেন অনেক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ।

পুশইনের পাশাপাশি স্বেচ্ছায়ও ভারত থেকে আসা রোহিঙ্গাদের খবর জানে বাংলাদেশ সরকারও। নতুন এসব রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই নিবন্ধিত না। আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ার এই সংকটময় সময়ে ভারত থেকে আসা এই রোহিঙ্গারা তাই বাড়তি মাথাব্যথা বাংলাদেশের জন্য।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, কিছু রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় এসেছে। তারা যখন ধরপাকড়ের শিকার হচ্ছে তখন বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসছে।

তিনি বলেন, ভারত ভালো করেই জানে এদের আবাস্থল বাংলাদেশে নয়। তারা (রোহিঙ্গারা) আরাকানের বাসিন্দা। কিন্তু কেন তারা পুশ ইন করছে এটা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হওয়া দরকার। কারণ এটা তো আমরা ডিসার্ভ করি না।

বাংলাদেশ-ভারত বিশাল সীমান্তে কর্মতৎপরতা বাড়ালেও ঠেকানো যাচ্ছে না রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ। এমনটা চলতে থাকলে রোহিঙ্গা সংকট আরো ঘনীভূত হবে বলে আশঙ্কা।

/এটিএম

Exit mobile version