Site icon Jamuna Television

এমিরেটসের বিরুদ্ধে যাত্রী হয়রানির অভিযোগ, তদন্তের কথা জানালো কর্তৃপক্ষ

এমিরেটস এয়ারলাইনসের বিরুদ্ধে ৭১ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিককে হুইলচেয়ার সুবিধা না দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে ।

ওই যাত্রীর নাম লায়লা হুসেইন, তিনি গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক যাওয়ার পথে এমিরেটসের দুইটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে দুবাইগামী ফ্লাইট ইকে৫৮৭ (সিট ১১এইচ) এবং দুবাই থেকে নিউইয়র্কগামী ইকে২০৫ (সিট ৪৭সি) ফ্লাইটে যাত্রা করেন।

ঢাকা বিমানবন্দরে হুইলচেয়ার সুবিধা পেলেও দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর ক্রুদের জানানো সত্ত্বেও প্রতিশ্রুত হুইলচেয়ার পাননি বলে ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

এমিরেটসের গ্রাউন্ড স্টাফকে অনুরোধ করার পর তাকে সামনের দিকে ‘অল্প হাঁটতে’ বলে বলা হয়, সেখানে হুইল চেয়ার পাবেন। কিন্তু বৃদ্ধ ওই যাত্রী দীর্ঘ পথ হাঁটার পরও কোনো হুইলচেয়ার পাননি। দুবাই ট্রানজিটের সময় তাকে অন্য টার্মিনালে ট্রেনের মাধ্যমে যাতায়াত করতে হলেও এমিরেটস কর্মীদের বারবার অনুরোধ করেও কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি বলে পরিবারের অভিযোগ।

এরপর মিলান বিমানবন্দরে ইকে২০৫ ফ্লাইটের দুই ঘণ্টার ট্রানজিটের সময় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। যেখানে সাধারণত নিউইয়র্কগামী যাত্রীদের বিমান থেকে নামতে হয় না, সেখানে সব যাত্রীদের নামিয়ে আনা হয়, কিন্তু বসার মতো কোনো আসন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এ অবস্থায় বৃদ্ধা লাইলা হুসেইন বয়স ও শারীরিক অবস্থার কারণে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হন এবং একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

এ ঘটনায় উড়োজাহাহের অন্য যাত্রীরাও বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্ন তোলেন, ‘কীভাবে এমিরেটসের মতো একটি এয়ারলাইন্স দুই ঘণ্টা ধরে যাত্রীদের দাঁড়িয়ে রাখতে পারে এবং কোনো সহায়তা দিতে পারে না?’

নিউইয়র্কে বসবাসরত ভুক্তভোগী লায়লা হুসেইনের মেয়ে ইশরাত জাহান দুবাইয়ে এমিরেটস কাস্টমার সার্ভিসে মায়ের জরুরি সহায়তা চেয়ে যোগাযোগ করলেও কোনও লাভ হয়নি।

তিনি জানান, এমিরেটসের একজন এজেন্ট তাকে বলেন, ‘তারা সাহায্য করতে পারবে না কারণ তিনি এখন মিলান বিমানবন্দরে নেই এবং কেন এই টিকিট কিনেছেন।’

একটি ফেসবুক পোস্টে ইশরাত জাহান ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘উচ্চমূল্যের টিকিটের বিনিময়ে এই ধরনের যাত্রীসেবা কি আমাদের প্রাপ্য? জীবনের সবচেয়ে খারাপ এয়ারলাইন্স অভিজ্ঞতা… যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতেও আমি আর কখনো এমিরেটস বেছে নেব না।’

বিশেষ করে হুইলচেয়ার সুবিধা ও বয়স্ক যাত্রী সেবার ক্ষেত্রে এমিরেটসের দুর্বল যাত্রীসেবা নিয়ে এর আগেও অভিযোগ উঠলেও সেগুলোর সমাধান হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলে এমিরেটসের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা মিলান মালপেনসা বিমানবন্দরে সহায়তা সংক্রান্ত একজন যাত্রীর অভিযোগ তদন্ত করছি।’

এয়ারলাইনসটি জানিয়েছে, বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য বিমানবন্দর ও গ্রাউন্ড সার্ভিস বিভাগের সাথে কাজ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে যাত্রীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছে এমিরেটস।

বিমানখাতের পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনাকারী আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার হিসেবে এমিরেটসের যাত্রী অধিকার, নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রয়েছে, বিশেষত হুইলচেয়ার প্রয়োজন এমন বয়স্ক যাত্রীদের ক্ষেত্রে।

/এমএন

Exit mobile version