আহমেদ রেজা:
৫৬ হাজার বর্গমাইলের সবুজ, স্মিত বাংলাদেশ। সেই সবুজের খানিকটা আকড়ে নুরুল ইসলাম পুরোটাই এই দেশের মানুষকে দিয়ে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে সবুজ এই ভূখন্ড স্বাধীন করেন। যা এখন নতুন প্রজন্মের। তার চিন্তা-চেতনা, মনন-মস্তিস্কে শুধুই বাংলাদেশ আর দেশের মানুষ ছিল।
যমুনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা নুরুল ইসলাম পরিশ্রমের সিড়ি ডিঙ্গিয়ে জীবনকে সাজিয়েছিলেন। সংকটেও তিনি প্রবল সম্ভাবনার কথা বলতেন। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে বিন্দুমাত্র চিন্তা করতেন না। সাহস নিয়ে বাঁধার মোকাবেলা করতেন। কিন্তু সাধারণের মতো জীবনযাপন করতেন।
সফল এই শিল্পপতি পদ্মা পাড়ের বিস্তৃত জনপদ নবাবগঞ্জের কামারখোলা গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে কর্মসংস্থান তৈরীতে গড়ে তোলেন যমুনা গ্রুপ। যা এখন বাংলাদেশের গর্ব। এছাড়াও প্রায় অর্ধশত শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললেও কখনও তিনি ঋণখেলাপি হননি। বিদেশে দেশের টাকা পাচার করেননি। যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানেই সোনা ফলিয়েছেন তিনি।
দর্শকের আস্থার যমুনা টেলিভিশন কিংবা পাঠকপ্রিয় দৈনিক যুগান্তর। গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে নিপীড়িত মানুষের পাশে থাকার টান ছিল তার। দেশপ্রেমিক এই মুক্তিযোদ্ধা সত্য ও জনগণের পাশে থাকতে চাইতেন।
করোনা মহামারীর সময় আজকের এই দিনে অনন্ত পথের পথিক হন বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম। পরিবার-পরিজন, স্বজন সহকর্মীদের ভাসান শোকের সাগরে। রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধায় স্বপ্নবাজ এই মানুষটি চির বিদায় নেন। আজ রোববার (১৩ জুলাই) তার চলে যাওয়ার ৫ বছর।
যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ বলেন, জুলাই-আগস্টে যমুনা টেলিভিশন যে সাহস দেখিয়েছে তার বীজ নুরুল ইসলাম বুনে গেছেন। তিনি সবসময় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে চাইতেন। রাজনীতি-অর্থনীতিতে মানুষের মধ্যে বৈষম্য তিনি দূর করতে চাইতেন।
যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম বলেন, মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ দূর করতে তিনি ঝুঁকি নিয়েছিলেন। গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা যে ভূমিকা পালন করেছে, নুরুল ইসলাম বাবুলও ভেতরে ঠিক তেমনি ছিলেন। তিনি অর্থনীতির দিক দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এ সময় নুরুল ইসলামের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়াও কামনা করেন তার সহধর্মিনী।
এখনও অনেকের কাছে নুরুল ইসলাম প্রতিদিনের প্রেরণার উৎস; কর্মগুণ, সততা, নিষ্ঠা ও ধৈর্য্যশীলের প্রতীক।
/আরএইচ

