Site icon Jamuna Television

রংপুরে ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ডের কাছে মিললো অবৈধ অস্ত্র, গ্রেফতার ২

রংপুর ব্যুরো

রংপুরে তিনটি পৃথক বেসরকারি ব্যাংকের তিনজন সিকিউরিটি গার্ডের কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র, গুলি ও ভূয়া লাইসেন্স উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে তিনটি মামলা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে।

শুক্রবার ( ১৮ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টায় রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার ওসি আতাউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার মহানগরীর ব্যাংক-বীমা গুলোতে নিরাপত্তা টহল বাড়াতে গিয়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহানগরীর জাহাজ কোম্পানী মোড়স্থ মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ডের শাহাদাত হোসেনের (২৬) কাছ থেকে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ একটি ১২ বোরের দোনলা বন্দুক, ৫ রাউন্ড গুলি এবং ভুয়া লাইসেন্স উদ্ধার করা হয়। এসময় শাহাদত হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

শাহাদাত এলিট সিকিউরিটি ফোর্স কর্তৃক ওই ব্যাংকে নিয়োগকৃত ছিলেন। তিনি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শংকপুর গ্রামের সাইদুর সাকলাইনের পুত্র।

ওসি আরও জানান, একই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালাই নগরীর মাজেদা কমেপ্লক্সে অবস্থিত যমুনা ব্যাংকে। সেখানকার সিকিউরিটি মো. জহুরুল হকের (২৭) ব্যবহৃত একটি ১২ বোরের একনলা বন্দুক, ৫ রাউন্ড গুলি ও ভূয়া লাইসেন্সসহ জহুরুলকে গ্রেফতার করি। জহুরুলও মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনি ইউনিয়নের হুলাশুগঞ্জ রাধানগর এলাকার আব্দুস সালামের পুত্র। তিনি এলিট সিকিউরিটি ফোর্স কর্তৃক নিয়োগকৃত ছিলেন।

তিনি আরও জানান, একইসময়ে দেওয়ানবাড়ি রোডে অবস্থিত ডাক বাংলা ব্যাংক থেকে সিকিউরিটি গার্ড মো. মোশফেকুর রহমানের (৪১) একটি ১২ বোরের একনলা বন্দুক, ৫ রাউন্ড গুলি ও ভুয়া লাইসেন্স উদ্ধার করা হয়। মোশফেকুর রহমান বিগ সিকুইরিটি এন্ড লজিসটিকস সার্ভিস লিমিটেড কর্তৃক নিয়োগকৃত ছিলেন।

অভিযানের সময় মোশফেকুর পালিয়ে যায়। মোশফেকুর রহমানও মিঠাপুকুরের হাতিমপুর এলাকার মো. আব্দুল বাতেনের পুত্র। তাদের তিনজনের নামে নগরীর কোতয়ালী থানায় অস্ত্র আইনে পৃথত পৃথকভাব মামলা করেছেন উদ্ধারকারী পুলিশের এসআই মাহফুজুর রহমান।

দুপুরে গ্রেফতারকৃত দুইজনকে রংপুর মহানগর আমলীত আদালত কোতয়ালীতে তোলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড চান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সানোয়ার হোসেন। এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত শুনানী চলছিল।

মামলার বাদি ও উদ্ধারকারী এসআই মাহফুজুর রহমান জানান, সাধারণত সিকিউরিটি গার্ড সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়োগের সময় তাদের অস্ত্র দিয়েই নিয়োগ দেয়। কিন্তু এক্ষেত্রে পুরো বিষয়টিই ভুয়াভাবে ঘটানো হয়েছে। পলাতক মোশফেকুর রহমানের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত ২ সিকিউরিটি গার্ড সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়ে অবৈধভাবে অস্ত্র ও ভূয়া লাইসেন্স কিনে তা দিয়ে চাকরি করে আসছিলেন। ব্যাংকগুলো যথাযথভাবে যাচাইবাছাই না করেই এসব সিকিউরিটি গার্ডকে অস্ত্র নিয়ে ব্যাংকে ডিউটির ব্যবস্থা করেছে। এতে ব্যাংক নিরাপত্তা ঝুকি বাড়ছে।

রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী জানান, এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। সিকিউরিটি কোম্পানীগুলো নিয়ম না মেনে এভাবে নিয়োগ দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। এছাড়াও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সেগুলো যাচাই-বাছাই না করেই অস্ত্র ব্যাবহার করে তাদের ডিউটির অনুমতি দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। এটা ব্যাংকগুলোর দায়িত্বহীনতা।

তবে এ বিষয়ে তিনটি ব্যাংকের শাখা ম্যানেজার এবং সিকিউরিটি কোম্পানীগুলোর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

/এমএইচ

Exit mobile version