দীর্ঘ ছয় দশক ধরে ভারতের আকাশ রক্ষার পর এবার অবসরে যাচ্ছে আলোচিত মিগ টোয়েন্টি ওয়ান যুদ্ধবিমান। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ফাইটার জেটটির সকল বহরকে স্থায়ীভাবে অবসরে পাঠাবে ভারতীয় বিমান বাহিনী। জায়গা নেবে দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত তেজাস এমকে ওয়ান ফাইটার জেট। যুদ্ধ জয়ের জন্য যত না আলোচনায় ছিল মিগ টোয়েন্টি ওয়ান, দুর্ঘটনাজনিত কারণে তার চেয়েও বেশি সমালোচিত এই আকাশযান।
১৯৬৩ সালে প্রথম সুপারসনিক ফাইটার জেট হিসেবে ভারতীয় বিমান বহরে যুক্ত হয় সোভিয়েত আমলের মিগ টোয়েন্টি ওয়ান যুদ্ধবিমান। যার বহর নিয়ে তৈরি হয় ভারতের প্রথম সুপারসনিক স্কোয়াড্রন।
৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সামলেছে স্বাধীন ভারতের আকাশ। একসময় ভারতীয় আকাশ প্রতিরক্ষার প্রধান ভরসার জায়গাই ছিল মিগ-২১। মুক্তিযুদ্ধেও ছিল অবিস্মরণীয় অবদান। এই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেই ১৯৭১ সালে ঢাকার গর্ভনমেন্ট হাউজে, পাক বাহিনীর ওপর করা হয় বোমাবর্ষণ। মুক্তিযুদ্ধের হিসেব নিকেশ অনেকটাই বদলে দিয়েছিল এই যুদ্ধবিমান- এমনটাই মত অনেক সামরিক বিশ্লেষকের।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও ১৯৬৫ এবং ‘৯৯ সালে পাকিস্তানের সাথে একাধিক যুদ্ধে অংশ নেয় মিগ টোয়েন্টি ওয়ান ফাইটার জেট। তবে, যুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা থাকলেও একের পর এক দুর্ঘটনার কারণে বরাবরই সমালোচনার জন্ম দিয়ে গেছে যুদ্ধবিমানটি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, এ যাবৎ পাঁচশ’রও বেশিবার দুর্ঘটনায় পড়েছে মিগ টোয়েন্টি ওয়ান। প্রাণ হারিয়েছেন দুশ’রও বেশি মানুষ ও পাইলট। গেল দেড় দশকেই দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে সিরিজটির অন্তত ২০টি বিমান।
২০২৩ সালে রাজস্থানে এক দুর্ঘটনার পর সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয় মিগ-২১’র পুরো বহর। অবসরের ঘোষণা আগেই ছিল যা এবার বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। মডেলটির অবশিষ্ট ৩৬ যুদ্ধবিমান আগামী সেপ্টেম্বরেই শেষবারের মতো উড়ব ভারতের আকাশে।
উল্লেখ্য, মিগ টোয়েন্টি ওয়ানের পরিবর্তে ভারতের আকাশে জায়গা করে নেবে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি তেজাস এমকে ওয়ান ফাইটার জেট। যা ফোর পয়েন্ট ফাইভ জেনারেশনের একটি লাইটওয়েট হাই এজিলিটি এয়ারক্রাফট।
/এমএইচআর

