Site icon Jamuna Television

যুক্তরাষ্ট্রে স্মার্টফোন রফতানিতে চীনকে ছাড়িয়ে শীর্ষে ভারত

প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে স্মার্টফোন রফতানির দিক থেকে চীনকে পেছনে ফেলে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে ভারত। এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে অ্যাপলের চীনের পরিবর্তে ভারতের দিকে উৎপাদন স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত, যা মূলত আমদানি শুল্ক-সংক্রান্ত কারণেই হয়েছে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিস স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া স্মার্টফোনের ৪৪ শতাংশই ছিল ভারতে তৈরি—যেখানে আগের বছরের একই সময়ে এ হার ছিল মাত্র ১৩%। ফলে ভারত থেকে স্মার্টফোন রফতানির পরিমাণ বছরে বছরে ২৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে রফতানিকৃত স্মার্টফোনের মধ্যে চীনে তৈরি ডিভাইসের অংশ ২৫% নেমে এসেছে, যা আগের বছরের ৬১% থেকে উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। ফলে চীন এখন তৃতীয় অবস্থানে চলে গেছে, ভিয়েতনামের পরেই।

ক্যানালিসের প্রধান বিশ্লেষক সন্যম চৌরাসিয়া বলেন, ভারতের এই অগ্রগতি মূলত অ্যাপলের উৎপাদন কাঠামো চীনের বাইরে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত থেকেই এসেছে। ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে অনিশ্চিত বাণিজ্য পরিস্থিতির কারণে অ্যাপল ভারতের দিকে ঝুঁকছে।

তিনি আরও লেখেন, ‘গত কয়েক বছরে অ্যাপল ভারতে তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়েছে এবং ২০২৫ সালের শুরু পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির বড় অংশ ভারত থেকেই সরবরাহ করছে।’

তবে এখনো অ্যাপল অনেকাংশে চীনের প্রতিষ্ঠিত উৎপাদন কেন্দ্রীক ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল বলেও জানান তিনি।

স্মার্টফোন ও সেমিকন্ডাক্টরযুক্ত অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তথাকথিত প্রতিশোধমূলক শুল্ক প্রযোজ্য না হলেও, অ্যাপল সিইও টিম কুক গত মে মাসে বলেন, এসব ডিভাইস এখনো অন্তত ২০% হারে শুল্কের মুখে পড়ছে।

তখন কুক বলেছিলেন, ‘আমার ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া আইফোনগুলোর বেশিরভাগই ভারতের তৈরি হবে।’

উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদনকে উজ্জীবিত করতে বিদেশি পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর মাধ্যমে বিদেশি ফ্যাক্টরিতে তৈরি পণ্যকে মার্কিন বাজারে ব্যয়বহুল করে তুলতে চান।

এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হয়েছে চীন। চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প চীনা পণ্যে সর্বমোট ১৪৫% হারে শুল্ক আরোপ করেন, যার জবাবে, চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ১২৫% শুল্ক বসায়। মে মাসে দুই দেশ ৯০ দিনের জন্য পারস্পরিক শুল্ক কমাতে সম্মত হয়। এই সপ্তাহে সুইডেনে দুই দেশের বাণিজ্য আলোচকরা এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে আলোচনা চালাচ্ছেন।

তবে ট্রাম্পের এই অনিয়মিত শুল্কনীতি অনেক কোম্পানিকে চীনের বাইরে বিকল্প উৎপাদন কেন্দ্র খুঁজতে বাধ্য করেছে।

বিগত কয়েক বছর ধরেই কোম্পানিগুলো চীনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প হিসেবে ভারত ও ভিয়েতনামের মতো দ্রুত-বর্ধনশীল এশীয় অর্থনীতিগুলোর দিকে ঝুঁকছে। করোনা মহামারির সময় চীনের কঠোর ‘জিরো-কোভিড’ নীতিও সরবরাহ চেইনের ঝুঁকি প্রকাশ করে দেয়।

সূত্র: সিএনএন নিউজ।

/এআই

Exit mobile version