Site icon Jamuna Television

আবারও ফিফা বর্ষসেরা হলেন রোনালদো

লিওনেল মেসি আর নেইমারকে পেছনে ফেলে টানা দ্বিতীয় বারের মতো ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার হয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ৫ম বারের মতো এই সম্মান পেলেন পর্তুগিজ সুপার স্টার।

ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলারদের হাতে স্বীকৃতি তুলে দিতে সোমবার লন্ডনের প্যালেডিয়ামের ব্লুমসবুরি বলরুমে জড়ো হন বিশ্ব ফুটবলের রথী-মহারথীরা। যেখানে আলাদা করে স্পট লাইট ছিলো ফুটবল ঈশ্বর ডিয়েগো ম্যারাডোনা আর ব্রাজিলের রোনালদোর ওপর।

আর ফুটবল বিশ্বের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিলো ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার জানতে। যে দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন লিওনেল মেসি, নেইমার জুনিয়র আর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। গেলো মৌসুমে গ্যালাকটিকোদের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন রোনাল্দো। ক্লাবটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোল তাঁর। প্রথম ফুটবলার হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগে করেছেন ১০০ গোল। রিয়ালের জার্সিতে জিতেছেন ৪ শিরোপা আর পর্তুগালকে জিতিয়েছেন ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। কনফেডারেশনস কাপে খেলেছেন সেমিফাইনাল। এসবের স্বীকৃতি হিসেবে ৪৩.১৬ শতাংশ ভোটে বর্ষসেরা হয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্দো। যেখানে মেসির ভোট ১৯.২৫ আর নেইমারের ছিল ৬.৯৭ শতাংশ। ব্যালন ডি অর থেকে আলাদা হওয়ার পর ফিফা বেস্টের ২ পুরস্কারই এখন রোনালদোর দখলে। অবশ্য সমান সংখ্যকবার বর্ষসেরা হয়েছেন লিওনেল মেসি।

এদিকে, রিয়াল মাদ্রিদকে টানা ২ বার চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জেতানোয় বিশ্বের সেরা কোচের খেতাব জিতেছেন জিনেদিন জিদান। ম্যানুয়েল নয়ার ও কেইলর নাভাসকে হটিয়ে সেরা গোলরক্ষক হয়েছেন ইতালি ও য়্যুভেন্টাসের গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী জিয়ানলুইজি বুফন।

বছরের সেরা গোলের জন্য পুসকাস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন আর্সেনালের ফরোয়ার্ড অলিভার জিরুড। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে এই স্করপিয়ন কিকের নজড় কেরেছে জুরিদের।

ফিফার বর্ষসেরা একাদশেও রিয়াল মাদ্রিদের জয়জয়কার। সেরা ১১’তে আছেন রোনালদো, রামোস, মডরিচ, মার্সেলো ও টনি ক্রুস। আর অন্য ক্লাবগুলো থেকে প্রতিনিধীত্ব করছেন মেসি, নেইমার, ইনিয়েস্তা, বোনুচ্চি, ডানি আলভেস ও জিয়ানলুইজি বুফন।

বিশ্বসেরা স্বীকৃতি

ফুটবলারদের ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের প্রথম স্বীকৃতি দেয়া হয় ১৯৫৬ সাল থেকে। ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকী, ক্রীড়া সাংবাদিকদের ভোটে ইউরোপের সেরা ফুটবলারদের জন্য ব্যালন ডি’অর চালু করে। প্রথম দিকে পুরস্কারটি পেতে একজন খেলোয়াড়কে দুটি শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হতো; এক. তাঁকে ইউরোপীয় হতে হবে, দুই. খেলতে হবে ইউরোপের কোনো লিগে। এই নিয়মের কারণেই ব্যালন ডি’অর কখনোই হাতে নিতে পারেননি ফুটবলের দুই কিংবদন্তি পেলে আর ম্যারাডোনা। পেলে তো ইউরোপে খেলতেই আসেননি। ম্যারাডোনা ইউরোপ মাতিয়ে গেলেও দক্ষিণ আমেরিকান হওয়ায় এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হননি। বহু বছর পর ফিফা উদ্যোগ নেয় বছরের সেরা ফুটবলারকে সম্মানিত করার। ১৯৯১ সালে ফিফার উদ্যোগে চালু হয় ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার। চার বছর পর ফ্রান্স ফুটবল তাদের পুরস্কার-পদ্ধতিতে একটু পরিবর্তন আনে। সিদ্ধান্ত নেয়, পুরস্কারটি অ-ইউরোপীয় খেলোয়াড়দের জন্যও উন্মুক্ত করে দেওয়ার। তবে শর্ত রাখা হয়, তাদের খেলতে হবে ইউরোপের লিগে। ২০০৭ সালে ব্যালন ডি’অর উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সবার জন্যই। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয়, যে ফুটবলার ব্যালন ডি’অর জিতছেন, তিনিই হচ্ছেন ফিফার বর্ষসেরা। পরপর পাঁচবার এমনটা ঘটায় একটি পুরস্কার ঘোষণায়, অন্যটির পর আগ্রহ কমতে থাকে। এ নিয়ে অনেক আলোচনার পর অবশেষে ২০১০ সালে একীভূত হয় দুটো পুরস্কার- ব্যালন ডি’অর আর ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কার এক হয়ে নাম ধারণ করে ‘ফিফা-ব্যালন ডি’অর’। ২০১৫’র পর এই ঐক্যতা ভেঙে যায়। ব্যালন ডি’অর আলাদা। ফিফা আলাদা হয়ে ২০১৬ থেকে তাদের পুরস্কারের নাম করে দ্য বেস্ট ফিফা মেন্স প্লেয়ার, যার দ্বিতীয়টি জিতলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ২০১৬-এর ব্যালন ডি’অরও জিতেছেন এই পর্তুগীজ।

 

Exit mobile version