Site icon Jamuna Television

শাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, শিক্ষকদের দায়ি করলো পরিবার

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের তাইফুর রহমান প্রতীক নামে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। বিকেলে তার রুমের দরজা ভেঙে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এসময় ফ্যানের সঙ্গে প্রতীকের লাশ ঝুলতে দেখা যায়।

পরে ময়না তদন্তের জন্য লাশ এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পুলিশ জানায়, রবিবার মধ্যরাত বা শেষ রাতে প্রতীক আত্মহত্যা করেছেন।

তাইফুর রহমান প্রতীক ২০১১-১২ সেশনের ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলায়। এদিকে নিহতের বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শান্তা তাওহিদা ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জানান, প্রতীক অনার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। তার ইচ্ছা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার। কিন্তু শিক্ষক রাজনীতির কারণে মাস্টার্সের বিভিন্ন কোর্সে কম নম্বর দেয়া হয়। সেই জন্য এই আত্মহত্যা করতে পারেন।

শান্তা তাওহিদা ফেসবুকে লিখেন, আমার কলিজার টুকরা আমার আদরের একমাত্র ভাই আমার প্রতীক আর নাই… শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ কে আমি ছাড়বনা, অনার্স এ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া ছেলেটাকে বিভিন্ন ইস্যু বানায়ে মাস্টারস এ সুপারভাজার দেয় নাই. বিভিন্ন কোর্সে নম্বর কম দিয়েছে! আমার ভাইটা টিচারর হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল এটাই তার অপরাধ… গত ছয় মাস ধরে ডিপার্টমেন্ট তিলেতিলে মেরে ফেলছে আমার ভাইকে…আমার কলিজার টুকরা কষ্ট সহ্য না পেরে কাল সুইসাইড করেছে..
আমার কলিজার টুকরা ছাড়া আমি কিভাবে বাঁচব? ভাইরে আমি আসতেছি তোর কাছে ভাই..

তিনি আরেকটি স্ট্যাটাসে লিখেন, আমার ভাইটারে গত মাসেও আমি জিজ্ঞেস করেছি আমি কী তোর বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করব? আমার ভাই বলছে আপু আমি জিআরআই দিয়েছি আপু , আমি ইউকে চলে যাব, অামার তো রেফারেন্স লাগবে! শিক্ষকরা ভয় দেখাইছে কিছু করলে রেফারেন্স লেটার দিবে না…
আমার ভাইরে মেরে ফেলছে ওরা …
আমি কই পাব আমার টুকরারে আমি কই পাব?

শিক্ষক রাজনীতির কারনে প্রচন্ড হতাশায় প্রতীক আত্মহত্যা করেছে  স্বজনদের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সামছুল হক বলেন, তিনি ২ মাস ধরে বিভাগে যোগদান করেছেন তার এমন কিছু জানা নেই। তবে পুলিশি তদন্তে সব বিষয়ই উঠে আসবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জহির উদ্দিন বলেন, এসব বলার সময় এখন না। পুলিশ প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রয়েছে সব বিষয়ই খতিয়ে দেখা হবে।আগে যে ছেলেটি মারা গেছে তার ময়না তদন্ত সহ দাফন শেষ করতে হবে। কারে কোন অভিযোগ থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন মনে হলে অবশ্যই একটি তদন্ত কমিটি করতে পারে।

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পুরো ঘটনারই একটি তদন্ত হবে। পুলিশ প্রশাসন তদন্ত করবে। সুতরাং এখনই এ বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে রাজি নন।

Exit mobile version