Site icon Jamuna Television

উদ্বোধনের ২বছর পরেও চালু হয়নি চিলমারী নদীবন্দর

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে চিলমারী নদী বন্দর সরকারী ভাবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাসহ উদ্বোধনের দুই বছর অতিবাহিত হলেও বন্দর চালু হয়নি। ফলে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত কার্যক্রম শুরু আশ্বাস বন্দর কর্তৃপক্ষের।

জানা যায়, বর্তমান সরকার পুনরায় চিলমারী বন্দরটি সচল করার উদ্যোগ নেয়। সে অনুযায়ী ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিলমারী সফরে এসে চিলমারীকে নৌ বন্দর হিসেবে ঘোষণা দেন। কিছুদিন পর ২৩ সেপ্টেম্বর চিলমারীর রমনা ঘাট নামক স্থানে নদীবন্দর উদ্বোধন করেন তৎকালীন নৌ মন্ত্রী শাজাহান খান। এছাড়া বন্দরের উন্নয়নে প্রকল্প নেয়া হয়।

এদিকে বন্দরের শ্যালোঘাটসহ নদ-নদীর ঘাট পরিচালনা করে আসছে জেলা পরিষদ। বিআইডব্লিউটিএ-কে অবগত না করেই বন্দরের ইজারা দেয়া হয়। এনিয়ে দু’পক্ষের মাঝে সৃষ্টি হয় দ্বন্ধ। বিষয়টি নিয়ে আদালত পর্যন্ত গড়ালে আরো জটিলতার সৃষ্টি হয়। সমস্যা সমাধানে সে সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত নৌমন্ত্রী শাজাহান খান গত বছরের জুন মাসে চিলমারী সফরে আসেন এবং চিলমারী নদীবন্দর পরিদর্শন কালে সকল সমস্যা এবং দ্বন্দ্ব সমাধান করাও আশ্বাস দেন। কিন্তু আশ্বাসের ছয়মাস অতিবাহিত হলেও চিলমারী নৌ বন্দরের কার্যক্রম চালু না হওয়ায় হতাশ সাধারণ মানুষ।

নৌ-মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চিলমারী এক সময় একটি ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা কেন্দ্র ছিল। এ স্থানটি অনেক আগে থেকেই ‘চিলমারী বন্দর’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এ বন্দর দিয়ে হাজার হাজার মণ পাট, ধান, চাল প্রভৃতি পণ্য নিয়ে বড় বড় জাহাজ চলাচল করত। ব্রিটিশ আমল থেকে কলকাতা হতে গৌহাটি এবং আসামের ধুবড়ি পর্যন্ত নৌ-যাতায়াত ছিল। বন্দরটিকে ঘিরে চিলমারীতে গড়ে উঠেছিল পাট,সরিষা, ধান, গম, বাদাম, তিসির ও ভুট্টার গুদাম ঘর। দেশের নামিদামি পাট কোম্পানিগুলো চিলমারীতে এসে অফিস খুলে পাট ক্রয় করতেন। তবে কালের বিবর্তনে আর নদী ভাঙ্গনসহ নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে চিলমারী বন্দরটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বন্দর কেন্দ্রিক অভ্যন্তরীণ ব্যবসা বাণিজ্যিক কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে পড়ে।

এলাকার আঃ রহিম (৫০), শহিদুল (৫৫),শফিকুল ইসলাম (৬৫),মজিবর রহমান (৭০) সহ অনেকেই জানান, দুই বছর হয়ে যাচ্ছে কিন্তু এখনো বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়নি। আমাদের মধ্যে বন্দর নিয়ে আশা জেগেছিল। এলাকার উন্নয়ন হবে,মানুষের কর্মসংস্থান হবে,কৃষকদের উপকার হবে। কিন্তু এখনও কাজ শুরু না হওয়ায় আমরা দ্বিধায় আছি বন্দরের মুখ দেখব কি?

এব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ন পরিচালক সাইফুল ইসলামের সাথে মোবাইলে জানান, ইতিমধ্যে বন্দরের উন্নয়নে প্রায় সাড়ে ৩শত কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হয়েছে। দ্রুত নদী ড্রেজিং এর কাজ শুরু হবে সাথে নদী বন্দরের কার্যক্রমও শুরু হবে।

Exit mobile version