Site icon Jamuna Television

সেই আসিয়া বিবিকে খালাস দিল সুপ্রিমকোর্ট

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ খ্রিস্টান নারী আসিয়া বিবির বেকসুর খালাস পাওয়ার রায় বহাল রেখেছে পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্ট। এর আগে এ রায় ঘিরে পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছিল।

আসিয়া বিবির মুক্তির রায়ের বিরুদ্ধে করা পিটিশনের শুনানি শেষে আদালত মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেছেন।

এ রায়ের ফলে প্রাণনাশের হুমকির মুখে থাকা আসিয়া বিবি এখন পাকিস্তান ছাড়তে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আসিয়া বিবির দুই কন্যা এরই মধ্যে পাকিস্তান ছেড়েছে। এখন আসিয়া বিবিও বিদেশে আশ্রয় পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাকিস্তানের খ্রিস্টান নারী আসিয়া আট বছর মুলতানের কারাগারে কাটানোর পর মুক্তি পেয়ে আত্মগোপনে আছেন।

ওই সময়ে মুক্তির পরপরই একটি বিশেষ বিমানে তাকে রাজধানী ইসলামাবাদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দেশটির ইংরেজি দৈনিক ডনের খবরে এসব তথ্য জানা গেছে।

সর্বোচ্চ আদালত আসিয়া বিবিকে খালাস দেয়ার পর থেকেই পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ চলছিল।

সহিংস এ বিক্ষোভ বন্ধ করতে আসিয়া বিবি যেন পাকিস্তান ছাড়তে না পারে তা নিশ্চিত করতে রাজি হয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সমঝোতা করেছে পাকিস্তান সরকার। এরপর আন্দোলনকারীরা আটকে রাখা সড়কগুলো ছেড়ে দিয়েছে বলে খবর গণমাধ্যমের।

সহিংসতা ও বিক্ষোভ থামাতে আসিয়ার দেশত্যাগে বাধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সরকার। নিরাপত্তার জন্য আসিয়াকে পাকিস্তানেরই একটি গোপন জায়গায় পাহারা দিয়ে রাখা হয়।

অন্যাদিকে, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আসিয়ার স্বামী আশিক মসিহ নিজের ও পরিবারের সদস্যদের আশ্রয় দিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।

মুক্তির পর আসিয়াও তাকে হত্যা করা হতে পারে আশঙ্কায় বিদেশে আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন। কানাডা আসিয়াকে আশ্রয় দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

সুপ্রিম কোর্ট আগের রায় বহাল রাখায় এখন আসিয়া পাকিস্তান ছেড়ে কানাডা যাওয়ার পথ প্রশস্ত হল।

প্রসঙ্গত, ৯ বছর আগে ফল তোলার সময় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আসিয়া নবী মুহাম্মদকে (সা.) কটূক্তি করেছিলেন বলে অভিযোগ অন্য নারীদের।

খ্রিস্টান আসিয়া বালতিতে থাকা পানি গ্লাসে করে খাওয়ায় গ্লাসটি অপবিত্র হয়ে পড়ে বলে দাবি করেছিলেন ওই নারীরা। এর পরই তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়।

পরে আসিয়ার বাড়িতেও হামলা হয়। সেই সময় মারধরের একপর্যায়ে আসিয়া ব্লাসফেমির ঘটনা স্বীকার করেন বলেও দাবি অভিযোগকারীদের।

আসিয়া অবশ্য শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে আনা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। কথা কাটাকাটি হলেও মুসলমানদের নবীর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের খারাপ কথা বলেননি, ভাষ্য তার।

নিম্ন আদালতে আসিয়ার এ ভাষ্য টেকেনি; বিচারে তার মৃত্যুদণ্ড হয়, যা পরে হাইকোর্টেও বহাল থাকে।

Exit mobile version