Site icon Jamuna Television

ভারতীয় সেনাদের হাতে মার খেয়ে অস্ত্র তুলে নেয় আদিল: রয়টার্সের প্রতিবেদন

গত বৃহস্পতিবার বিকালে কাশ্মিরে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালিয়ে ভারতের ৪৪ সেনাকে হত্যা করেছে স্বাধীনতাকামী সংগঠন জয়শে মোহাম্মদের সদস্য আদিল আহমদ দার। তিন বছর আগে ভারতীয় সেনাদের হাতে মারধরের শিকার হয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নেয় সে, এবং যোগ দেয় জয়শে মোহাম্মদ-এ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমনটাই জানিয়েছেন আদিলের বাবা মা।

আদিল আহমদ দারের কৃষক বাবা গুলাম হাসান দার জানিয়েছেন, ‘সেনাসদস্যদের ঘরে আজ যে কষ্ট ও যন্ত্রণা, আমার ঘরেও সেই একই যন্ত্রণা ভোগ করছি।’

তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে স্কুল থেকে ফেরার সময় বন্ধুদের সঙ্গে আদিলকে একবার আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করেছিল ভারতীয় সেনারা। ওর বিরুদ্ধে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ করা হয়েছিল। সেনার হাতে মার খাওয়ার পরেই ও জঙ্গি দলে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে।’

আদিলের মা ফাহমিদা বলেন, ‘কয়েক বছর আগে স্কুল থেকে ফেরার সময় আদিল ও তার বন্ধুদেরকে আটকিয়েছিল সেনাসদস্যরা। এরপর তাদেরকে মারধর করা হয়। তাকে ধরে মাটিতে নক ঘষতে বাধ্য করে ভারতীয় সেনারা। তারপর থেকেই সেনাদের ওপর আদিলের রাগ ছিল। তবে কীভাবে ও জঙ্গি দলে ভিড়ে গেল তা বুঝতে পারিনি। গত বছরের মার্চ থেকে আমরা ওর খোঁজ পাইনি।’

গুলাম হাসান দার আরো বলেন, ‘আমার ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী নেতারা। কাশ্মীর সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে না করলে এই রক্ত ঝরবেই। রাজনীতির জন্য আমাদের ছেলেরা জঙ্গি হয়ে যাচ্ছে।’ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘ওর তো দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। জম্মু গিয়েছিল, কিন্ত আর ফিরল না। আর ফিরবেও না আদিল।’

তারা জানান, ‘আদিল খুব ক্রিকেট ভক্ত ছিলো। ভারতীয় ক্রিকেট তারকা মাহেন্দ্র সিং ধোনির ভক্ত ছিল সে। বাবা বলেন, ‘ধোনি কখনো চার-ছক্কা মারলে টিভিতে খেলা দেখার সময় সে খুশিতে লাফাতো।

আদিলের এক বন্ধু জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের কাছে তার পছন্দের দল ভারত হেরে যাওয়ার পর সে কষ্ট পেয়েছিল। বন্ধুরা সবাই পাকিস্তানের সমর্থক ছিলো। পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আদিল কয়েকদিন ঘরে থেকে বের হয়নি। কারণ তার ধারণা ছিল বন্ধুরা ভারত সমর্থন করার কারণে তাকে ক্ষেপাবে।

Exit mobile version