Site icon Jamuna Television

বাঁচানো গেল না অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ সালমাকে

স্টাফ রিপোর্টার,মানিকগঞ্জঃ

বাঁচানো গেল না অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ সালমা বেগমকে। টানা ২৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শুক্রবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

সালমার স্বামী রুবেল মিয়া তার স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সালমা বেগম তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার ২ বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের কৃষক রুবেল মিয়ার স্ত্রী সালমা বেগম গত ৭ ফেব্রুয়ারি মাটির চুলায় রান্না করতে গিয়ে অসাবধানতার ফলে তারে গায়ে আগুন লাগে। তাৎক্ষনিক পরিবারের সদস্যরা তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

তার শরীরের ৩০ ভাগ পুড়ে যাওয়ায় দীর্ঘ মেয়াদে চিকিৎসা নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দরিদ্র রুবেল মিয়া বার্ন ইউনিটে ধার-দেনা করে মাত্র ৫ দিন চিকিৎসা করাতে পেরেছিলেন। এতেই তার খরচ হয়েছিলো ৮০ হাজার টাকা। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে ৫ দিন পর সালমাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন তিনি।

অর্থাভাবে সালমার চিকিৎসা না হওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ.এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়সহ অনেকেই আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এরপর তাকে দ্বিতীয় দফায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

স্বামী রুবেল মিয়া জানান, আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষত নিয়ে তার স্ত্রী সালমা হাসপাতালের বিছানায় সব সময় ছটফট করেছেন। কিন্তু টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নিতে পারেনি। প্রতিদিন মোটা অংকের টাকা খরচ করাও তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না। টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র কিনেত না পারায় চিকিৎসাসেবা ব্যহত হয়েছে। গত তিনদিনে তার অবস্থা অবনতি ঘটতে থাকে। পোড়া ক্ষতের যন্ত্রনায় ধীরে ধীরে সালমা নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

শনিবার সকালে সালমার মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। তাকে বাড়িতেই দাফন করা হবে বলে জানান তার স্বামী।

Exit mobile version