ফেনী প্রতিনিধি:
তিন বছরের শিশু শহিদুল ইসলাম আবির। তাকে সকাল ১০ টায় তুলে নিয়ে হাত পা বেঁধে মুখে গামছা পেঁছিয়ে পরিত্যক্ত একটি ভবনের পাঁচ তালার ছাদে রেখে চলে যায় তৌহিদুল ইসলাম জনি। রাত ৮ টায় এসে দেখে তখনও জীবিত। তীব্র গরম শিশুটির প্রাণ নিতে পারেনি। হাত পা নাড়াচ্ছে। মৃত্যুর যন্ত্রণায় ওষ্ঠাগত প্রাণটি শুধু ছটফট করছে। ১০ মিনিট সে দৃশ্য দেখে আবারও চলে যায় জনি।
ভোর ৪ টায় এসে দেখে নিথর দেহ। এবার হাত-পা মুখের বাঁধন খুলে বাড়ির পাশে ডোবায় ফেলে চলে যায়। যাতে মানুষ বুঝতে পারে পানিতে পড়ে মারা গেছে আবির। দুই দিনপর অর্ধগতিল লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
বুধবার ০৬ মার্চ ফেনীর সিআইডি’র এএসপি আকতার হোসেন পিপিএম ২০১৫ সালের ফেনীর মাস্টার পাড়ার শিশু আবির হত্যার বর্ণনা শোনালেন এভাবে। জনি ২০১৮ সালের ২৮ জুন অস্ত্র ও মাদকসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে ধরা পড়ে বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। হাজতে থাকা অবস্থায় এই মামলার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।
ফেনী শহরের মাস্টার পাড়ার বাসিন্দা শিশু আবিরের বাবা জসিম হাজারীর সাথে মাদক বিরোধের জেরে পাশ্ববর্তী মাস্টার পাড়ার জনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
তিনি আরও জানান, ২০১৫ সালের ২৪ অক্টোবর সকাল ১০ টায় আবির নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের দুই দিনপর পুলিশ অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। পরে আদালতে আদেশক্রমে ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে গত ৫ মার্চ সিআইডি পুলিশ জনিকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়। বুধবার ৬ মার্চ হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
জনির বিরুদ্ধে ফেনী মডেল থানায় দুই মাদক মামলা, দুইটি অস্ত্র আইনে মামলা ও একটি হত্যা মামলা রয়েছে।

