Site icon Jamuna Television

মোবাইলে রাজনকে হত্যার হুমকি দেন স্ত্রী, অভিযোগ পরিবারের

আমি আপনার ছেলেকে (ডা. রাজন কর্মকার) আপনাকে(শ্বাশুড়ী), হত্যা করবো, তারপর নিজে আত্মহত্যা করবো। মোবাইল ফোনে এভাবে শাশুড়ি খুকু রানী কর্মকারকে হত্যার হুমকি দেন ডা. রাজন কর্মকারের স্ত্রী কৃষ্ণা মজুমদার রুপা।

ডা. রাজনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে তার মামা সুজন কর্মকার বলেন, শনিবার বিকালে কৃষ্ণা আমরা বোন খুকুকে ফোন করে উত্তেজিত ভাষায় কথা বলে।কৃষ্ণা ফোনে রাজনকে হত্যার হুমকি দেয়।মোবাইলে কৃষ্ণা আমার বোনকে বলেন, আপনি ও আপনার ছেলেকে আমি হত্যা করবো, তারপর নিজে আত্মহত্যা করবো।

কেন এই হুমকি দিলেন কৃষ্ণা এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. রাজনের মামা বলেন, তাদের আগে থেকেই পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল। রাজনের সঙ্গে তার পরিবারের কোনো যোগাযোগ ছিল না। ৪ বছর ধরে রাজন একবারও নোয়াখালীর বাড়িতে যায়নি।তার পরিবারের সঙ্গে তাকে যোগাযোগ করতে দিতেন না কৃষ্ণা।

তিনি বলেন, রাজনের খবর শোনার পর থেকে জ্ঞান হারিয়েছেন আমার বোন। ছেলের শোক তিনি কীভাবে সামলাবেন। রাজনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। তার মৃত্যুতে কৃষ্ণার হাত রয়েছে। আমরা রাজনের খুনির বিচার চাই।

তিনি আরো বলেন, রাজনের মা ও বাবা দুজনই শিক্ষক।তিন ভাই বোনের মধ্যে রাজন সবার বড়।তার এই মৃত্যু পুরো পরিবারকে হতাশার সাগরে ডুবিয়ে দিল।

ডা. রাজনের এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলেও দাবি করেছেন তার সহকর্মীরাও। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডেন্টাল বিভাগের গবেষণা সহকারি ও বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির সাংগঠিনক সম্পাদক আসাদুজ্জামান সরোয়ার বলেন, ডা. রাজনের পারিবারিক দ্বন্দ্ব আছে বলে শুনেছি। দেড় বছর আগেও পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ছিলেন প্রায় এক মাস। তাই এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। আমরা তার হত্যার বিচার চাই।

তিনি বলেন, ডা. রাজন খুব ভালো একজন সার্জন ছিলেন। তিনি খুব মেধাবী ছিলেন। সারা দিন খুব ব্যস্ত থাকতেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনে তিনি ছিলেন খুবই আন্তরিক। আমাদের দুভার্গ্য আমরা খুব ভালো একজন চিকিৎসক হরালাম।

এ বিষয়ে ডা. কৃষ্ণার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ডা. রাজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডেন্টাল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। তিনি খাদ্যমন্ত্রী সাধন মজুমদারের জামাতা। তার স্ত্রী কৃষ্ণা মজুমদার রুপা বিএসএমএমইউর সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।

রাজন কর্মকার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অষ্টম ব্যাচের (বিডিএস) ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জের এখলাসপুর। তার বাবার নাম সুনীল কর্মকার।

গত শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত একটি হাসপাতালে রোগীর অস্ত্রোপচার করে ইন্দিরা রোডের বাসায় যান রাজন। রোববার ভোর ৪টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডের বাসা থেকে রাজনকে তার পরিবারের লোকজন স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সূত্র: যুগান্তর

Exit mobile version