Site icon Jamuna Television

হত্যাযজ্ঞ লাইভ করায় ফেসবুক-গুগলে বিজ্ঞাপন দেয়া বন্ধ

ক্রাইস্টচার্চে নামাজরত অবস্থায় মুসল্লিদের ওপর শেতাঙ্গ বন্দুকধারীর চালানো স্মরণকালের ইতিহাসে বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের লাইভ প্রচার করায় ফেসবুক ও গুগলে বিজ্ঞাপন দেয়া বন্ধ করছে নিউজিল্যান্ডের বৃহত্তম কোম্পানিগুলো।

নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড জানায়, এএসবি ব্যাংক, লোট্টো এনজেড, বার্গার কিং, ও স্পার্কের মতো ব্র্যান্ডের মতো নিউজিল্যান্ডের প্রতিষ্ঠানগুলো অনিয়ন্ত্রিত ফেসবুক লাইভের প্রতিবাদ জানাতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইন্টারনেটে অনিয়ন্ত্রিত কন্টেন্টের কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে তার বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

তবে কতদিনের জন্য তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা স্পষ্ট করেনি তারা। শুক্রবার নৃশংস এ হামলার কিছুক্ষণ পরই ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয় কিউইব্যাংক।

বড় এ প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন সিদ্ধান্তের পর অন্যান্য অনেক কোম্পানিও ফেসবুক ও গুগলে বিজ্ঞাপন দেয়া বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে।

অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত শেতাঙ্গ সন্ত্রাসী ব্রেন্টন ট্যারেন্টের একটি গো-প্রো ক্যামেরা ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি সরাসরি সম্প্রচার করে। তার এ লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে বীভৎস এ হত্যাকাণ্ডটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে ।

১৭ মিনিটের ভিডিওটি ফেসবুক ছাড়াও ইউটিউব ও টুইটারে শেয়ার হলে পরে তা সরিয়ে নেওয়া হয়।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরদার্ন ভিডিওটি মুছে ফেলার জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন ফেসবুকের কাছে জানতে চাইবেন বন্দুকধারী ওই হত্যাযজ্ঞ কীভাবে লাইভ প্রচার করতে পারল।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ৫০ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের পাঁচজনের প্রাণহানির খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা আটজন হতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আবদুল মোমিন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪৮ জন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েকজন। নৃশংস এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে।

ভয়াবহ এ হামলার পর নিউজিল্যান্ডের সবধর্মের মানুষ মুসলিম কমিউনিটির পাশে দাঁড়িয়েছেন। ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে মর্মান্তিক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বারবার গণমাধ্যমের সামনে এসে নিজেই তথ্য জানাচ্ছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরদার্ন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে শুরু করে আহতদের দেখতে যাওয়া, তাদের খোঁজখবর নেয়া- সবখানেই নিজে যাচ্ছেন। যেখানেই যাচ্ছেন, যার সঙ্গেই কথা বলছেন, সবখানেই তাকে দেখা যাচ্ছে বিমর্ষ অবয়বে।

শোক প্রকাশে শুধু কালো পোশাকই পরেননি, মসজিদে নামাজরত মুসলিমদের হামলার ঘটনায় নিউজিল্যান্ডের মুসলিমদের প্রতি একাত্মতা প্রকাশে মাথায় ওড়না জড়িয়ে রয়েছেন।

জাসিন্দা আরদার্নের মতো নিউজিল্যান্ডের সর্বস্তরের মানুষও আতঙ্কিত মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছে। শান্তনা দিচ্ছেন স্বজন হারানোদের। রাস্তায় মুসলমানদের চলাচল ও নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করছে সেখানকার অমুসলিম জনগণ।

Exit mobile version