Site icon Jamuna Television

পুলিশ হেফাজতে মারা গেলেন শিক্ষক, বিক্ষোভে উত্তাল কাশ্মির

পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার পর কাশ্মিরের আনাচ কানাচে বিদ্রোহী নিধন অভিযান শুরু করে ভারতীয় পুলিশ। তল্লাশি অভিযানে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ধরপাকড়ও চলে যথেচ্ছভাবে। বিদ্রোহীদের মদদ দেন এই অভিযোগে তিন-চার দিন আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল কাশ্মীরের এক স্কুল শিক্ষককে। সোমবার রাতে পুলিশি হেফাজতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে এক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর। খবর ছড়াতেই ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে উপত্যকা।

বছর আঠাশের স্কুল শিক্ষকের নাম রিজওয়ান পণ্ডিত। জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার অবন্তীপোরার বাসিন্দা রিজওয়ানকে পুলিশ পাকড়াও করে তিন-চার দিন আগে। বিদ্রোহীদের কাজকর্মে নিয়মিত মদত দেওয়ার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশের তরফে যদিও রিজওয়ানের মৃত্যু নিয়ে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি, তবে পুলিশের হেফাজতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কীভাবে মৃত্যু হলো তাঁর, সেই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে পুলিশ।

অবন্তীপোরার একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন রিজওয়ান। শান্তশিষ্ট, ভালো মানুষ বলেই এলাকায় তাঁর পরিচয় ছিল। রিজওয়ানের পরিবারের দাবি, কোনও ভাবেই জঙ্গি কার্যকলাপে তাঁর কোনও যোগ ছিল না। অভিযোগ, পুলিশ জোর করে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এ দিকে, রিজওয়ানের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিক্ষোভ শুরু হয়। শ্রীনগর ও অবন্তীপোরায় রাস্তায় নেমে শুরু হয় প্রতিবাদ। বন্ধ করে দেওয়া হয় দোকানপাট। নিরাপত্তারক্ষীদের দিকে পাথর ছোড়া শুরু হয়।

স্কুল শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৭৬ ধারায় তদন্ত শুরু হয়েছে। জম্মুর কার্গো ক্যাম্পে রিজওয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। জানা গেছে, গ্রেফতারের পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করেছিলেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। তবে কোন অফিসাররা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন, বা জেরায় কী জানা গেছে সেই সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি।

ঘটনার তীব্র নিন্দা করে টুইট করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। নিরাপরাধ মানুষের উপর জুলুম বন্ধ করার জন্য প্রতিবাদ জানিয়ে টুইট করেছেন পিডিপি নেত্রী তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও। তিনি বলেছেন, ‘‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিরাপরাধ মানুষজনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, আর ফেরত আসছে তাঁদের কফিনে বন্দি দেহ। এই সব ঘটনা শিক্ষিত মানুষজনকেও অস্ত্র তুলে নিতে বাধ্য করে। আমরা অনেক সহ্য করেছি, এ বার কাশ্মীরে মিথ্যা স্বদেশভক্তির প্রদর্শন বন্ধ হোক।’’

রিজওয়ানের মৃত্যুকে ঘিরে প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাকামী নেতারাও। হুরিয়ত নেতা মিরওয়াইজ উমর ফারুখ টুইট করে বলেছেন, ‘‘পুলিশি হেফাজতে ফের নির্মম মৃত্যুই প্রমাণ করে কাশ্মীরিরা কতটা অসহায় এবং নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।’’

Exit mobile version