Site icon Jamuna Television

সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তার কোটি টাকা আত্মসাৎ, দিশেহারা গ্রাহকরা

মুহাম্মদ আরিফুর রহমান, ফেনী
সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ফেনী শাখায় গ্রাহকের একাউন্টে টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা টাকার জন্য ব্যাংকে ভিড় করলে ব্যাংক কর্মকর্তারা তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করছেন। ফেনী শাখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার রেহানা আক্তার গ্রাহকের তোপ থেকে বাঁচতে গা ঢাকা দিয়েছেন। সহকারী ম্যানেরজার গোলাম কিবরিয়া জানিয়েছেন টাকা আত্মসাতের জড়িত ক্যাশ অফিসার হাসান মো. রাশেদ। অভিযুক্ত রাশেদের বাড়ি ফেনী দাগনভূঞা উপজেলার সিলোনীয়া গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল মালেক। বর্তমানে সে চট্টগ্রামের বারইয়ার হাট শাখায় কর্মরত আছেন।

সহকারী ব্যাংক ম্যানেজার আরও জানান, প্রাথমিকভাবে তিন গ্রাহকের ৭৭ লাখ ৫০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অন্য গ্রাহকের টাকা বেহাত হয়েছে কি-না এখনও সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছেনা।

টাকার দাবিতে রবিবার সকাল থেকে গ্রাহকরা ব্যাংকে ভিড় করে। এখন তাদের চোখে-মুখে শুধুই অন্ধকার। অন্য গ্রাহকরাও দুশ্চিন্তায় রয়েছে।

ফেনী শহরের মিজান রোডস্থ গ্র্যান্ড হক টাওয়ারের তৃতীয় তলায় অবস্থিত সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ফেনী শাখা। রবিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ফেনী সদর উপজেলার কাজিরবাগ ইউনিয়নের শাহ আলমের স্ত্রী রিজিয়া আক্তার গত জানুয়ারি মাসে ব্যাংকে টাকা তুলতে যান। তার একাউন্টে জমা থাকা ২৭ লাখ তুলতে চাইলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, তার একাউন্টে কোনো টাকা নেই। পরবর্তীতে তার প্রবাসী স্বামী শাহ আলমের একাউন্টে থাকা ১৭ লাখ টাকার খোঁজ নিলে সেখানেও কোনো টাকা নেই বলে জানান। তিনি বিষয়টি তার প্রসাসী স্বামীকে জানালে তিনি দেশে এসে ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে ধর্ণা দেন। আজ নয় কাল এভাবে করতে করতে প্রায় দুই মাসেও টাকা পায়নি তারা। এবিষয়ে শাহ আলম জানান, ‘আমি প্রধান শাখায় দরখাস্ত দিয়েছি। ব্যাংকে যোগাযোগ করলে তারা বিকেলে আসতে বলেন। তারা আমাদের সাথে কুকুর-বিড়ালের মতো আচরণ করে। আমরা ব্যাংকে টাকা রেখে কী অপরাধ করেছি?’

একই অবস্থা ফুলগাজী উপজেলার হাসানপুর গ্রামের ব্রিকফিল্ড ব্যবসায়ী আবদুস সালামের। তার একাউন্টে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেই। তাদের জমা দেয়ার রসিদ থাকলেও ব্যাংক স্টেটম্যান্টে মাত্র ২৬ হাজার ৬৯২ টাকার হিসেব পাওয়া যায়। তিনি জানান, তিনি ব্যাংকে যত টাকা জমা দিয়েছে ব্যাংকে হিসেবের খাতায় সে টাকা নেই। যে টাকা উত্তোলন করেছে সে হিসেবগুলো রয়েছে। অনেক টাকার রসিদ এখনও খুঁজে পাওায় যায়নি। যদি টাকা জমা দেয়ার রসিদ না থাকতো তাহলে এখন কী অবস্থা হতো। ব্যাংক কর্মকর্তারা স্বীকার করতোনা।

ফেনী শাখার সহকারী ম্যানেজার গোলাম কিবরিয়া জানান, টাকা আত্মসাতের হাসান মো. রাশেদ জড়িত। সে গ্রাহক থেকে টাকা গ্রহণ করে তাদের একাউন্টে জমা দেয়নি। এবিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে গ্রাহকের টাকা ব্যাংক পরিশোধ করবে।

এব্যাপারে হাসান মো. রাশেদের সাথে মুঠোফোনে (০১৬১৮০৬৫৯৬৭) যোগাযোগ করতে চাইলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

Exit mobile version