Site icon Jamuna Television

বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, বকেয়া বিলের মামলায় কারাগারে দিনমজুর

কুমিল্লা প্রতিনিধি
দিনমজুর আব্দুল মতিন। জীবনে কখনও বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারেননি। তার বাড়িতে বিদ্যুতের কোন সংযোগ নেই। গত চার বছর পূর্বে বিদ্যুতের জন্য আবেদন করে বকেয়া বিলের মামলায় আবদুল মতিনকে যেতে হয়েছে কারাগারে। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলায়। বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও বকেয়া বিল না দেওয়ার অপরাধে আব্দুল মতিন(৪৫) নামের ওই দিনমজুরকে গ্রেফতার করে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করেছে মুরাদনগর থানা পুলিশ। বুধবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোচাগড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।

ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, মোচাগড়া গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার ২৫৬টি পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য চার বছর আগে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এ আবেদন করে। আবেদনের পর স্থানীয় দালাল আবুল কালাম আজাদ ও আবুল বাসার প্রতিটি গ্রাহকের কাছ থেকে মিটার প্রতি ১৫ হাজার টাকা নেয়। ওই সময় মৃত অহিদ আলীর ছেলে আব্দুল মতিন মিয়াও আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ সংযোগের অনুমোদন প্রদান করে। কিন্তু মতিন মিয়া দালাল চক্রকে চার হাজার টাকা দিলেও বাকি টাকা দিতে না পারায় মতিন মিয়ার আবেদনে একই এলাকার মৃত আব্দুস ছামাদের ছেলে সফিকুল ইসলামের ছবি লাগিয়ে দেয়। পরে মতিন মিয়ার মিটারটি গত ২০১৫ সালের ২২ মার্চ সফিকুল ইসলামকে সংযোগ দেয়া হয়। প্রায় ১৭ মাস সে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখে।

কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর চান্দিনা অফিসের এজিএম লক্ষন চন্দ্র পাল বাদী হয়ে বকেয়া বিল চার হাজার সাত টাকা অনাদায়ের জন্য একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় মঙ্গলবার রাতে মুরাদনগর থানার এসআই কবির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আব্দুল মতিনকে আটক করে বুধবার দুপুরে কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

এ ব্যাপারে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত একেএম মনজুর আলম বলেন, একটি মামলায় মতিন মিয়ার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কোম্পানীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হাবিবুর রহমান আবেদন ফাইলে ছবি পরিবর্তনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আব্দুল মতিনের নামের মিটার সফিকুল ইসলাম ব্যবহারের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। মামলা হওয়ার পূর্বে মতিন মিয়া নোটিশ পেয়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আজ এ ঘটনাটি ঘটতো না।

Exit mobile version