Site icon Jamuna Television

বারহাট্টা-কলমাকান্দায় বাঁধ ভেঙে ফসলি জমিতে ঢুকছে পানি

কামাল হোসাইন, নেত্রকোণা

ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোণার বারহাট্টা ও কলামাকান্দা উপজেলার দুটি ইউনিয়নে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে পাকা বোরা ফসল।

মঙ্গলবার সকালে কলমাকান্দার বড়কাপন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাদিছুজ্জামান জানান, পাশ্ববর্তী সুনামগঞ্জ জেলা মধ্যনগর ইউনিয়নের গড়াডুবা হাওরের একটি বাঁধ ভেঙে কলামাকান্দা উপজেলার বড়কাপন ইউনিয়নের মোহিশাসুরা মেদার বিল, জাঙ্গিয়ার বিলসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি ঢুকছে। তিনি আরো জানান, এসব বিলের আশি ভাগ ফসল কাটা হয়ে গেছে।

এদিকে বারহাট্টা উপজেলার চিরাম ইউনিয়নের গুমাই নদী সংলগ্ন সিংগুয়াইর বিলের একটি ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে গেছে।

সোমবার বিকেল তিনটার পর থেকে ভাঙ্গা অংশ দিয়ে ফসলি জমিতে পানি ঢুকছে। এতে করে ওই বাঁধের আওতায় অন্তত ২৫০ হেক্টর জমির বোরো ফসল হুমকির মুখে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গুমাই নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় সোমবার সকাল থেকে ওই নদী সংলগ্ন সিংগুয়াইর বিলের ফসল রক্ষা বাঁধের পুটিয়াজান (পুটাকিয়া) এলাকায় বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এসময় স্থানীয়রা বাঁশ, কাঠ, মাটি, বস্তা ফেলে প্রতিহত করা চেষ্টা চালায়। কিন্তু বিকেল তিনটার দিকে ওই অংশের অন্তত ২০ ফুট বাঁধ ভেঙ্গে যায়।

খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাঈনুল হক কাশেম, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আকাক্তারুজ্জামানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্রমিক নিয়োগ করে বাঁধটি মেরামতের কাজ শুরু করেছে।

বারহাট্টা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাইমিনুল রশিদ জানান, ওই ব্লকে মোট ৬৮০ হেক্টর জমি রয়েছে। এর মধ্যে বিআর-২৮ জাতের প্রায় ২০০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। এছাড়া কিছু জমি অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় থাকায় সেগুলোর ফসল ডোবার আশঙ্কা নেই। তবে পানি বাড়তে থাকলে নিচু এলাকার প্রায় ২৫০ হেক্টর জমির উঠতি ফসল হুমকির মুখে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে।’

এদিকে বাঁধ ভাঙ্গার পর থেকে স্থানীয় চাষিরা কাঁচা ও আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা শুরু করেছেন। কিন্তু এলাকায় পর্যাপ্ত শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে চাইলেও অনেকে ফসল কাটাতে পারছেন না বলে জানান ওই এলাকার কৃষক তরিকুল ইসলাম।

নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, ‘বাঁধটির নিচ দিয়ে বিএডিসির একটি পাইপ ঢোকানো হয়েছিল। পাইপ ঢোকানোর কারণে ওই জায়গাটিতেই লিকেজ হয়ে ভাঙ্গন দেখা দেয়। তবে বাঁধটি রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’

বারহাট্টার ইউএনও ফরিদা ইয়াসমিন জানান, ‘জেলা প্রশাসক স্যারসহ আমরা ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটির কাছে অবস্থান করে বাঁধ মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। একই সঙ্গে দ্রুত ফসল কাটার যন্ত্র সংগ্রহ করে ধান কাটার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, আর সপ্তাহখানেক সময় পেলেই এসব জমির ফসল নির্বিঘ্নে ঘরে তোলা সম্ভব হতো।’

Exit mobile version