Site icon Jamuna Television

বিএসটিআইয়ের ঘোষিত ভেজাল ৫২টি পণ্য বাজার থেকে অপসারণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট

বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) ল্যাবে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া ৫২টি ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার এবং পরবর্তীতে বিএসটিআই কর্তৃক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এসব পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছে ভোক্তা অধিকার সংস্থা ‘কনসাস কনজুমার্স সোসাইট’ (সিসিএস)।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সিসিএসের পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি জমা দেন প্রতিষ্ঠানটির আইন উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। আবেদনের সাথে বিএসটিআই কর্তৃক প্রকাশিত অনুউত্তীর্ণ ৫২টি পণ্যের তালিকা সংযুক্ত করা হয়েছে।

ওইসব পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার ও উৎপাদন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিটে সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালককে (ডিজি) বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে উপরোক্ত দুই সচিব ও তিন প্রতিষ্ঠান প্রধানকে কেন এসব পণ্য প্রত্যাহার করা হবে না এবং উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে গত সোমবার আইনি নোটিশ দিয়েছিল সিসিএস। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়ে দেয়া ওই নোটিশের জবাব না দেয়ায় বৃহস্পতিবার এ রিট আবেদন করা হয়েছে।

মানহীন পন্য গুলো হলো সিটি ওয়েলের সরিষার তেল, গ্রিন ব্লিচিং এর সরিষার তেল, শমনমের সরিষার তেল, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েলের সরিষার তেল, কাশেম ফুডের চিপস, আরা ফুডের ড্রিংকিং ওয়াটার, আল সাফির ড্রিংকিং ওয়াটার, মিজান ড্রিংকিং ওয়াটার, মর্ণ ডিউয়ের ড্রিংকিং ওয়াটার, ডানকান ন্যাচারাল মিনারেল ওয়াটার, আরার ডিউ ড্রিংকিং ওয়াটার, দিঘী ড্রিংকিং ওয়াটার, প্রাণের লাচ্ছা সেমাই, ডুডলি নুডলস, শান্ত ফুডের সফট ড্রিংক পাউডার, জাহাঙ্গীর ফুড সফট ড্রিংক পাউডার, ড্যানিশের হলুদের গুড়া, প্রাণের হলুদ গুড়া, ফ্রেশের হলুদ গুড়া, এসিআইর ধনিয়ার গুড়া, প্রাণের কারি পাউডার, ড্যানিশের কারী পাউডার, বনলতার ঘি, পিওর হাটহাজারী মরিচ গুড়া, মিস্টিমেলা লাচ্ছা সেমাই, মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, মিঠাইর লাচ্ছা সেমাই, ওয়েল ফুডের লাচ্ছা সেমাই, এসিআইর আয়োডিন যুক্ত লবন, মোল্লা সল্টের আয়োডিন যুক্ত লবন, কিং’য়ের ময়দা, রুপসার দই, মক্কার চানাচুর, মেহেদীর বিস্কুট, বাঘাবাড়ীর স্পেশাল ঘি, নিশিতা ফুডস এর সুজি, মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, মঞ্জিলের হলুদ গুড়া, মধুমতির আয়োডিন যুক্ত লবন, সান ফুডের হলুদ গুড়া, গ্রীন লেনের মধু, কিরনের লাচ্ছা সেমাই, ডলফিনের মরিচের গুড়া, ডলফিনের হলুদের গুড়া, সূর্যের মরিচের গুড়া, জেদ্দার লাচ্ছা সেমাই, অমৃতের লাচ্ছা সেমাই, দাদা সুপারের আয়োডিন যুক্ত লবন, মদীনার আয়োডিন যু্ক্ত লবন, নুরের আয়োডিন যুক্ত লবন।

উল্লেখ্য, গত ৩ ও ৪ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে উল্লেখ করা হয়েছে- বিএসটিআই সম্প্রতি ২৭ ধরনের ৪০৬টি খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে ৫২টি পণ্য নিম্নমানের ও ভেজাল রয়েছে। গত ২ মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ রিপোর্ট প্রকাশ করে বিএসটিআই। পরবর্তীতে বিএসটিআইয়ের ওই তালিকা সংগ্রহ করে সিসিএস।

সিসিএসের নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএসটিআই। কিন্তু তাদের সংশ্লিষ্ট পণ্যসমূহ জব্দ না করে শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ওই সব নিম্নমাণের পণ্য বাজারে বিক্রির সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

Exit mobile version