Site icon Jamuna Television

প্রায় ২ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া!

জিল্লুর রহমান পলাশ, গাইবান্ধা :

গত ১০ বছরে প্রায় দুই কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ফেলেছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা। বকেয়া বিল পরিশোধে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী লিমিটেড(ন্যাসকো)- এর গোবিন্দগঞ্জ ডিস্টিবিউশন কর্তৃপক্ষ বারবার তাগাদা দিলেও কোন উদ্যোগ নিচ্ছেনা পৌর কর্তৃপক্ষ। পৌরসভা ও সড়কের বাতির জন্য তিনটি মিটারে এ বিপুল পরিমাণের বকেয়া পড়েছে বলে জানিয়েছে ন্যাসকোর কর্মকর্তারা।
তবে এটিকে ভূতুড়ে বিল দাবি করে পৌর মেয়র মো. আতাউর রহমান সরকার বলেন, পৌর ভবন ও সড়কে বাতি জ্বলার কারণে এতো টাকা বিল আসার কথা নয়। বিদ্যুৎ ব্যবহারের হিসেব (রিডিং) না দেখে মনগড়া বিল দিয়েছে সরবরাহকারী প্রতিষ্টান।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী লিমিটেড(ন্যাসকো)- এর গোবিন্দগঞ্জ ডিস্ট্রিবিউশন নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ পৌর এলাকায় বাণিজ্যিক ও আবাসিকসহ প্রায় ২৭ হাজার গ্রাহক রয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার নামে রয়েছে তিনটি মিটার। এরমধ্যে ৮০৩ ও ৮১৮ হিসেব নম্বরের দুটি মিটারে সড়কের বাতি ও ৯২৪/ই নম্বরের মিটারে পৌর ভবনে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। গত ১০ বছর ধরে তিনটি মিটারের হিসেবের বিপরীতে পৌরসভার কাছে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৩১ হাজার ৮৮১ টাকা। এরমধ্যে ৮০৩ হিসেব নম্বরের মিটারে ১ কোটি ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৮৭৪ টাকা, ৮১৮ হিসেব নম্বরের মিটারে ৮০ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩ টাকা এবং ৯২৪ হিসেব নম্বরের মিটারে ৫ লাখ ২২ হাজার ৯৩৪ টাকা বকেয়া পড়েছে।

ন্যাসকো লিমিটেডের গোবিন্দগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এ, কে, এম শাহাদত হোসেন দুই মাস আগে এখানে যোগদান করেছেন। যোগদানের পরই কয়েকবার বকেয়া পরিশোধে পৌর মেয়রকে তাগাদা দেন। কিন্তু তাতেও কোনো সাড়া পাননি। এর আগে যারা ছিল তারাও বিল পরিশোধের বিষয়ে অনেকবার বলেছেন। কিন্তু কাজ হয় নি।

তবে বিপুল পরিমাণ বকেয়ার বিষয়টি ন্যাসকোর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে বকেয়া আদায়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সমঝোতার জন্য চিঠি দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তারপরেও বিল পরিশোধে পদক্ষেপ না নিলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পৌর মেয়র মো. আতাউর রহমান সরকার আর্থিক সংকটের বিষয়টি সামনে এনে বলেন, এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও অর্থ সংকটের কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। তাছাড়া পৌর এলাকায় কর (ট্যাক্স) আদায়ে তেমন সাড়া না পাওয়ায় উন্নয়নমুলক অনেক কার্যক্রম থমকে আছে। সেইসাথে বিদ্যুৎ বিলও বকেয়া পড়েছে। বকেয়া পরিশোধ করতে গত বছরের ২১ জানুয়ারী স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত বরাদ্দ না মেলায় বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার পরিমাণ বাড়ছে।

Exit mobile version