Site icon Jamuna Television

বামদের শিক্ষা নেয়ার সময় এসেছে

ভারতের স্বাধীনতার ৭২ বছর পার হয়েছে। এর একটি বিশাল সময় ধরে মানে ৩৪ বছর বামরা পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় ছিল। বামরা সমতার রাজনীতি করে। এদের রাজনীতির একটি বিশেষ দিক হলো ধর্ম বিমুখতা।

ধর্ম বিমুখতা কারো ব্যক্তিগত বিষয় হতেই পারে। তবে সমস্যা হলো এরা প্রচণ্ড খোচাখুচি করে। অন্যরা কেন ধর্ম মানবে? এটাই এদের প্রধান সমস্যা। এরা মূলত ধর্মহীন পৃথিবী চায়। ধর্মহীন পৃথিবীতে কোনো অন্যায় থাকবে না এটাই এদের মূল বিশ্বাস।

যারা ধর্ম বিশ্বাস করে তাদের সে বিশ্বাস থেকে কখনো সরানো সম্ভব নয়। সরানো গেলেও তা শতকারা ১ ভাগ হবে কিনা সন্দেহ। এ কারণেই বর্তমান বামরা সমতার ঝাণ্ডা, কিংবা শোষিতের পক্ষে যতটা লড়াই করতে পারে, তার চেয়ে বেশি নাস্তিকতার বুলি বেশি ঝাড়ে।

আর এই ঝাড়াঝাড়ির মধ্যেই ধীরে ধীরে এদের রাজনীতি গুটিয়ে যাচ্ছে। এই গুটিয়ে যাওয়ার উদাহরণ যেমন রাশিয়ায় ছিল তেমনি শেষ উদাহরণ হিসেবে দেখা গেল ভারতে। কারণ প্রথম পশ্চিমবঙ্গে সাধারণ নির্বাচনে একটিও আসন জিতল না বামফ্রন্ট। তাদের ভোটের বড় অংশই চলে গেছে বিজেপি শিবিরে।

যার পরিণতিতে প্রধান বিরোধী দল তো বটেই, আসন ও ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে শাসক তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলার জায়গায় উঠে এলো নরেন্দ্র মোদির দল।

লোকসভা নির্বাচনে কীভাবে বামপন্থীদের সমর্থন রাতারাতি বিজেপির মতো ‘সাম্প্রদায়িক শক্তি’র হাতে চলে গেল তা বিস্ময় জাগায়। কারণ শোষিতের পক্ষে যে গলাবাজির দরকার ছিল, যে শক্তি প্রয়োগের দরকার ছিল তার সমস্তটাই বামরা প্রয়োগ করেছে ‘তুই ধর্ম কেন মানবি?’ এই চিন্তায়।

এরা ইসলামকে মানবতা শেখায়, হিন্দুৃকে শেখায় দেবতার বর বলে কিছু নেই, খ্রিস্টানকে শেখায় পুঁজিবাদ। অধপতনের এই কারণটাই যথেষ্ট। কারণ এরা জানেই না ইসলাম যুগে যুগে যে মানবতা দেখিয়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

এবার পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বামফ্রন্টের জন্য নৈরাশ্যের ছবি। যে নৈরাশ্য গত বছর থেকে শুরু। কারণ গত বছর ত্রিপুরায় ক্ষমতা হারানোর পরে সেখানে লড়াই যথেষ্ট কঠিন হয়ে যায়। সেই ধারা বজায় রেখেই উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে জোড়া আসনই সিপিএমের হাতছাড়া।

বামদের শিক্ষা নেয়ার সময় এসেছে। মুখে পুঁজিবাদের বিরোধিতা কিন্তু আসলে নিজের আখের গোছানোর যে প্রবণতা, তা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।

মূলধারার বামরা আগে যেমন শোষিতের পাশে ছিল তেমন হতে হবে। মনে রাখবেন পাজেরো গাঁড়ি হাকিয়ে তাদের পাশে গেলে চলবে না। কপালে লাল কাপড় বেঁধে প্লেনে চড়ে মানবতার বুলি আওড়ালেও চলবে না।

ফিরতে হলে বাস্তবতায় আসুন। এছাড়া কোনো পথ নেই।

Exit mobile version