Site icon Jamuna Television

পালিত হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস’

‘নারী নির্যাতন’ শব্দটির সাথে সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের পরিচয় আছে। সে অনুপাতে ‘পুরুষ নির্যাতন’ শব্দটি নতুন। তবে ধীরে ধীরে এটিও পরিচিত হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসে আজ ‘পুরুষ নির্যাতন’ নিয়ে কথা বললেন আয়োজকরা। এ উপলক্ষে রাজধানীতে  র‍্যালিও হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শুরু র‍্যালিটি শেষ হয় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে।

‘পুরুষ নির্যাতন দমন আইন চাই’ শীর্ষক ব্যানারসহ র্যালির আয়োজন করে বাংলাদেশ ম্যানস রাইট ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন। র‍্যালিতে অংশ নেয়া কয়েকজন তরুণের হাতে ‘পুরুষ মন্ত্রণালয় চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

পুরুষ দিবসের যাত্রা শুরু ১৯৯৮ সালে ১৯ নভেম্বর। ক্যারিবিয়ান অঞ্চল ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে প্রথম পালিত হয় দিবসটি। এরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি জনপ্রিয়তা লাভ করতে থাকে। ‘সেলিব্রেট ম্যান এন্ড বয়েজ’ স্লোগানে এ বছর ৬০টি দেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্রিটেন ভিত্তিক পত্রিকা দ্য মেট্রো।

মূলত, পুরুষের স্বাস্থ্যবিষয়ক এবং লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে সচেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে দিবসটি উদযাপন করা হয়। দিবসের নানা কর্মসূচিতে ‘ইতিবাচক রোল মডেল’ হিসেবে নিজেকে গঠনে পুরুষকে উৎসাহিত করা হয়। দিনটি উপলক্ষে ‘পুরুষ নির্যাতন’ এর যে প্রসঙ্গ ওঠে তা কতটা তথ্য নির্ভর? এ বিষয়ে ব্রিটেনের কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে দ্য মেট্রো।

তাতে দেখা যায়, ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যবর্তী সময়ে ব্রিটেনে অন্তত ৬ লাখ ৮০ হাজার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে পুরুষরা যৌন নিপীড়ন বা অন্যান্য ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন।

এদিকে ম্যানকাইন্ড ইনিশিয়েটিভের একটি গবেষণা অনুযায়ী, ব্রিটেনে নারী ঘরোয়া সহিংসতার শিকার যেমন হচ্ছেন, তেমনি পুরুষরাও ভুক্তভোগী হচ্ছেন এমন ঘটনার। দেশটিতে ঘরোয়া সহিংসতার শিকার প্রতি তিনজনের দুইজন নারী এবং একজন পুরুষ। গবেষণায় রেসপন্ডেন্ট হিসেবে অংশ নেয়া ২৭ শতাংশ নারী বলেছেন, তারা ১৬ বছর বয়সের পর থেকে কোনো না কোনোভাবে ঘরে সহিংসতার শিকার হয়েছেন। অন্যদিকে ১৩ শতাংশ পুরুষ বলেছেন একই রকম অভিজ্ঞতার কথা।

তবে ঘটা করে পুরুষ দিবস পালনের অনেক সমালোচনাও রয়েছে। দিবসটির কড়া সমালোচনা করে কেউ কেউ বলেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে তো প্রতিটি দিনই ‘পুরুষ দিবস’, সেখানে আলাদা করে একটি দিনকে উদযাপনের কোনো মানে নেই! তাদের মতে, বিভিন্নভাবে পুরুষ নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও তা নারী নির্যাতনের তুলনায় খুবই নগণ্য।

ঢাকায় আজকের র‍্যালি শেষে বাংলাদেশ ম্যানস রাইট ফাউন্ডেশনের সভাপতি শেখ খায়রুল আলম বলেন, আজ ঘরে বাইরে সব জায়গায় পুরুষরা নির্যাতিত হচ্ছে। কিন্তু আত্মসম্মানের জন্য তা প্রকাশ করতে পারছে না। আবার আইন না থাকায় আইনের আশ্রয়ও নিতে পারছে না। নারী নির্যাতন ও যৌতুক মামলাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন কিছু নারী। অন্যায় কাজে স্ত্রীকে বাধা দিয়ে অনেকে নারী নির্যাতন মামলার শিকার হচ্ছেন।

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শেখ খায়রুল আলম বলেন, আমিও একজন নির্যাতিত পুরুষ। স্ত্রীকে পেলাম না একদিনের জন্যও। অথচ তার দায়ের করা মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলায় ৭৭ দিন জেল খেটেছি। সম্মান একবার চলে গেলে আর তা পাওয়া যায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, অপরাধারী সাজা হোক আমরা চাই। কিন্তু নিরাপরাধ মানুষকে যাতে জেলে যেতে না হয় সে জন্য সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিপক্ষে আমরা।

আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের পোস্টার

Exit mobile version