Site icon Jamuna Television

ফরিদপুরে সেফটিক ট্যাংক পরিস্কার করতে নেমে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের চরব্রাক্ষন্দী গ্রামে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকি পরিস্কার করতে গিয়ে প্রাণ গেছে এক দম্পতির।শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, চরব্রাক্ষন্দী গ্রামের মৃত রাশেদ হাওলাদারের সৌদি প্রবাসী পুত্র মো. মিরাজ হাওলাদার(৪৫) ও মিরাজের স্ত্রী চায়না বেগম(৩৫)।

স্ত্রী চায়না বেগম সদরপুর উজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের আমিরাবাদ চৌরাস্তা গ্রামের কলম শিকদারের মেয়ে। প্রায় বিশ বছর আগে তাদের বিবাহ হয়। সংসার জীবনে তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। নাম হৃদয় হোসেন। সে ফরিদপুর ইয়াছিন কলেজের শিক্ষার্থী।

মিরাজ হাওলাদার সংসারের দারিদ্রতা দূরীকরণ করতে প্রায় ৮বছর যাবত প্রবাসী ছিলেন। গত দুই মাস পূর্বে প্রবাস জীবন থেকে একেবারেই দেশে চলে আসেন।

নিহতদের প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে বাড়িতে নতুন তৈরি সেফটিক ট্যাংক পরিস্কার করতে নামে মিরাজ। ট্যাংকর ভিতরে থাকা বাঁশ কাঠ সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে মিরাজ হাওলাদার ট্যাংকর ভিতরে প্রবেশ করে। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে চিৎকার দেয়। তার চিৎকারে স্ত্রী চায়না বেগম স্বামীকে উদ্ধার করতে একই ট্যাংকে নামে। পরে তিনিও স্বামীকে উদ্ধার চেষ্টা করতে গিয়ে গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। বাবা মার খোজ না পেয়ে তার ছেলে হ্নদয় হোসেন(১৮) সেফটি ট্যাংকের কাছে গেলে বাবা মার করুন অবস্থা দেখতে পায়। পরে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাদের কে ওই ট্যাংক থেকে উদ্ধার করে মুমূর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে।

হাসপাতালে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রুবানা আফরোজ তাদের মৃত্যু বলে ঘোষণা করেন। তিনি জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার অন্তত আধঘন্টা আগেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। ডা. রুবানা জানান, পারিবারিক সূত্রে জেনেছি, তারা সেপটিক ট্যাংক পরিস্কার করতে নেমেছিলেন, ধারণা করছি সেখানে কার্বন মনো অক্সাইড বা এই জাতীয় বিষাক্ত কোন গ্যাসেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে দীর্ঘ ৮ বছর পরে দেশে আসা মিরাজ ও তার স্ত্রীর এই করুন মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আশে পাশের গ্রামের মানুষও আসছেন শোকাহত পরিবারকে শান্তনা দিতে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম জানান, আমি সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক হাসপাতালে ছুটে যাই। নিহতের পারিবারিক ভাবে দাফনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

Exit mobile version