Site icon Jamuna Television

দাদনের টাকা পরিশোধ না করায় জেলেকে শেকলে বেঁধে নির্যাতন

135166411006736

বরগুনা প্রতিনিধি:

মৎস্য অধিদপ্তরের টানা ৬৫ দিনের অবরোধের কারণে উপকূলীয় হাজার হাজার জেলে বেকার হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এরমধ্যে বরগুনার পাথরঘাটায় দাদনের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ট্রলার মাঝি জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে জসিম নামে এক জেলেকে শেকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়।

গত রোববার সকালে পাথরঘাটা উপজেলার জেলে পল্লী হাজিরখাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত জসিম ওই এলাকার বাসিন্দা।

জেলে জসিম বলেন, চার মাস আগে পাথরঘাটার নজরুলের মালিকানাধীন ট্রলারে জেলে হিসেবে সাগরে মাছ ধরতে আট হাজার টাকা দাদন নিয়েছি। মৌসুমের শুরুতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ট্রলারের মাঝি জাকির সাগরে যেতে তাগিদ দেন। কিন্তু এতে আমি রাজি হইনি।

রবিবার সকালে বাজারে এলে ট্রলারের মাঝি জাকির হোসেনের সঙ্গে আমার দেখা হয়। এ সময় জাকির আমাকে তার ট্রলারের কাছে নিয়ে আসেন। জাকির টাকা ফেরত চাইলে আমি ১৫ দিন সময় চাই। কিন্তু সময় না দিয়ে আমাকে মারধর করে অন্যান্য জেলেদের সহায়তায় শেকল দিয়ে বেঁধে রাখে।

জসিম আরো বলেন, সকাল নয়টা থেকে দুপুর পর্যন্ত শিকলে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে ট্রলার মালিকের ছোট ভাই আল-আমিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমাকে মুক্ত করে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠান।

অভিযুক্ত মাঝি জাকির হোসেন বলেন, জসিম আরো কয়েকটি ট্রলারের দাদন নিয়েছে। আমাদের টাকা ফেরত চাইলে তা ফেরত না দিয়ে গা ঢাকা থাকে। দীর্ঘদিন পর তার দেখা পেলে তাকে ট্রলারের স্টাফদের কাছে রেখে আমি বাড়িতে যাই। পরে কে বা কারা জসিমকে শিকলে বেঁধেছে আমি জানি না।

ট্রলার মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, মৌসুমে মাঝির দায়িত্বেই ট্রলার মাছ শিকারে যায়। জেলে জোগার, দাদন দেয়াসহ জেলেদের সব দায়িত্ব থাকে মাঝির ওপর। এ ঘটনা শুনে তাৎক্ষনিক ছোট ভাইকে পাঠিয়ে জসিমকে মুক্ত করে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছি। মাঝি জাকির যে ঘটনা ঘটিয়েছে জেলে সমিতির মাধ্যমে এর বিচার হবে।

বাংলাদেশ মৎস্যজীবি ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী আমাদের সময়কে জানান, ৬৫ দিনের মৎস্য অবরোধের কারণে উপকূলীয় হাজার হাজার জেলে বেকার হয়ে পড়েছে। দাদনের টাকা নিয়ে পাথরঘাটায় যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক।

জেলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক দুলাল মাঝি বলেন, জেলে সমিতিতে ভুক্তভোগী জেলে অভিযোগ করলে তদন্ত করে মাঝির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাথরঘাটা থানার ওসি হানিফ সিকদার বলেন, এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাওয়ার যায় নি। ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Exit mobile version