Site icon Jamuna Television

কলাপাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতাল, ওষুধ ও ডাক্তার সংকটে ব্যাহত সেবা

Exif_JPEG_420

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ৫০ শয্যা হাসপাতালে ওষুধ ও ডাক্তার সংকটের কারণে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছে। এই হাসপাতালে ৫ জনের মধ্যে ২ জন ডাক্তারই আছেন ছুটিতে। ঈদ পরবর্তী গত ৭ দিনে ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়লেও হাসপাতালে খাবার স্যালাইন ছাড়া কোনো ওষুধই পাচ্ছে না রোগীরা। এছাড়া ডাক্তার সংকটের কারণে কলাপাড়ায় চিকিৎসা হয় এমন রোগীকেও পটুয়াখালী কিংবা বরিশাল রেফার করে দিচ্ছে ডাক্তার। মাত্র তিনজন ডাক্তারকে তিন লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা প্রদান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একই অবস্থা কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতাল ও মহিপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩৮ শিশু। আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছে কয়েকশ’ রোগী। কিন্তু হাসপাতাল থেকে শুধু খাবার স্যালাইন ছাড়া কোনো ওষুধই পাচ্ছেন না রোগীরা। প্রতিজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর স্বজনকে কলেরা স্যালাইন, এন্টিবায়োটিকসহ পাঁচ থেকে সাত ধরনের ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানালেন ওষুধ শেষ হয়ে গেছে। ওষুধের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৩৬ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও শূন্য রয়েছে ২৬টি পদ। কর্মরত ১০ জন ডাক্তারের মধ্যে কলাপাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতালে ৫ জন। কিন্তু ছুটিতে আছেন ২ জন। বাকি ৫ ডাক্তারকে কুয়াকাটা ও মহীপুর হাসপাতালসহ ১২টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দিতে হচ্ছে।

এছাড়া উপজেলায় দ্বিতীয় শ্রেণীর ৩৬টি পদের বিপরীতে ২টি, তৃতীয় শ্রেণীর ১২৯টি পদের বিপরীতে ৩৭টি, চতুর্থ শ্রেণীর ৩৪টি পদের বিপরীতে ১৫টি পদ শূন্য রয়েছে।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, অনেক রোগী বাইরের ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা যন্ত্রণায় চিৎকার করলেও ডাক্তার তো দূরের কথা নার্সদেরও পাওয়া যাচ্ছে না।

একাধিক রোগীর স্বজন জানান, নামেই হাসপাতাল। এখানে জ্বর ও কাশি ছাড়া আর কোনো রোগের চিকিৎসা হয় না। তারা অভিযোগ করেন দু’দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হলেও ডাক্তার দেখে গেছে মাত্র একবার। ডাক্তারের কাছে বারবার গিয়ে জানালেও তারা একবারও দেখতে আসছে না রোগীর কী অবস্থা।

হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স খাদিজা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ঈদের আগের দিন থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩৮ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। কিন্তু খাবার স্যালাইন ছাড়া এ মুহূর্তে কোনো ওষুধ সরবরাহ নেই।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার জানান, কিছু ওষুধের সংকট রয়েছে। তবে এজন্য চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। তবে ডাক্তারসহ জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, ৫০ শয্যা হাসপাতাল। কিন্তু প্রতিদিন শতাধিক রোগী ভর্তি থাকে। আউটডোরে চিকিৎসা দিতে হয় কয়েকশ’ রোগীকে। অথচ তারা কর্মরত আছেন মাত্র তিনজন ডাক্তার।

রোগী ও সাধারণ মানুষের দাবি কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ , পায়রা সমুদ্রবন্দর ও পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যে হাসপাতাল ২টি আছে তা এলাকা থেকে বেশ দূরে। এরপরও সেখানে নেই ডাক্তার। তাই কুয়াকাটা ও কলাপাড়া হাসপাতালের আরও আধুনিকায়ন ও জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ও চিকিৎসক পদায়ন প্রয়োজন। এজন্য তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

সূত্র: যুগান্তর

Exit mobile version