Site icon Jamuna Television

ঋণখেলাপিদের পেটে দেড় লাখ কোটি টাকা

ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের দৌরাত্ম্য থামানো যাচ্ছে না। প্রতিবছরই এর পরিমাণ বাড়ছে। মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতের ঋণখেলাপিদের পেটে ঢুকেছে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ। এসব অর্থ আটকে থাকায় এর বিপরীতে ব্যাংকগুলোর কোনো আয় হচ্ছে না। ফলে ব্যাংকগুলোর আয়ের পরিমাণ কমে গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে ব্যাংকিং খাতে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা নিট মুনাফা হয়েছিল। গত বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার কোটি টাকায়। ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে মুনাফার হার বেড়েছিল সাড়ে ১৪ শতাংশ। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে এ হার কমেছে ৫৭ দশমিক ৭ শতাংশ। ব্যাংকগুলোর আয় কমার কারণে তাদের সার্বিক কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকায়। এই প্রথমবার ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল। এছাড়া গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৪ হাজার কোটি টাকার বেশি খেলাপি ঋণ রাইটঅফ বা অবলোপন করা হয়েছে। এসব মিলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এর পরিমাণ ছিল ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। সে হিসাবে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৬ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। গত বছরের মার্চে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ২২ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা।

২০১৫ সালে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫১ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। সে হিসাবে মার্চ পর্যন্ত খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫৯ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ ওই পাঁচ বছরে এই ঋণ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।

সূত্র জানায়, সুশাসনের অভাবে ওই সময়ে ব্যাংকিং খাতে জাল-জালিয়াতির ঘটনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ১০টি জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

২০১৫ সালে আবার বেড়ে দাঁড়ায় ৫১ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। এ বছরে বেড়েছিল ১ হাজার ২১৬ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। এ বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। ওই বছরে বেড়েছে ১৮ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা।

Exit mobile version